৬০টি নাটক, সিনেমার মধ্যে ৪৬টিতে ধূমপান ও মাদক সেবনের দৃশ্য পাওয়া গেছে মানস পরিচালিত গবেষণায়। বর্তমানে নাটক, সিনেমায় পানি সেবনের চাইতে ধূমপান ও মাদক সেবনের দৃশ্য বেশি দেখানো হচ্ছে। জনপ্রিয় তারকাদের দ্বারা নাটক, সিনেমা, ওয়েবসিরিজে ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবনের দৃশ্য শিশু, কিশোর-তরুণদের ধূমপান ও মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করছে। ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা লঙ্ঘণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি আলাদা গাইডলাইন প্রণয়নের দাবী জানিয়েছেন আইনজীবি ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অনলাইনে “নাটক, চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন এবং ওটিটি’র গাইডলাইনের প্রয়োজনীয়তা” আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ মন্তব্য করেন।
সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ‘মানস’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও নীতি বিশ্লেষক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের এ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, ব্যারিষ্টার নিশাত মাহমুদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক সাগুফতা সুলতানা, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল’র প্রকল্প পরিচালক মো. বজলুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-এর টেকনিক্যাল এ্যাডভাইজার ফাহমিদা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব এবং আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা, ডিআইইউ এর শিক্ষার্থী নাজনীন সুলতানা প্রমুখ। সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানস এর তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন মানস এর সিনিয়ির প্রজেক্ট এন্ড কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান।
মানস কর্তৃক পরিচালিত গবেষণা ফলাফল তুলে ধরে উম্মে জান্নাত বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত ৬০টি নাটক, সিনেমার মধ্যে ৪৬টিতেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ধূমপানের দৃশ্য ছিলো নায়কের চরিত্র ৩৩টি, নায়িকার চরিত্রে ১৯, ভিলেন এর চরিত্রে ১২ এবং অন্যান্য পার্শ্ব চরিত্রে ২১ বার ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। গবেষণায় ৫টি জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে বাছাই করে ৬০টি নাটক, সিনেমা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ৬টি নাটকে এবং ৪০টি সিনেমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। নেটফ্লিক্স এ প্রচারিত সিনেমায় সবচাইতে বেশি তামাক ও মাদক ব্যবহারের দৃশ্য পাওয়া যায়।
বক্তারা আরো বলেন, এক শ্রেণীর মানুষ আমাদের কিশোর-তরুণদের ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে। একসময় সিনেমা, নাটক নির্মাণ ও প্রচারের ক্ষেত্রে সমাজ ও পরিবারকে প্রাধান্য দেওয়া হতো এখন সেগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। বর্তমানে বিশেষত: ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে সেলিব্রেটিদের দ্বারা অযাচিতভাবে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন আমাদের তরুণদেরকে ধূমপানসহ ক্ষতিকর মাদক সেবনে উৎসাহিত করছে। তাদের সুরক্ষায় বিদ্যমান একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে সংযুক্ত করা প্রয়োজন।
কেকে/ এমএস