বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫,
১৯ চৈত্র ১৪৩১
বাংলা English

বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
শিরোনাম: আমরা কখনোই বলিনি আগে নির্বাচন পরে সংস্কার: মির্জা ফখরুল      প্রতিদিন দোয়া পড়ে শুটিং সেটে যেতাম: নুসরাত       চীনে ড. ইউনূসের যে বক্তব্যে ভারতে তোলপাড়      ট্রাম্পের কাছে বিন্দু পরিমাণ ছাড় পাচ্ছে না ভারত      চট্টগ্রামে বাস-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭      গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত      চীন সফর শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      
জাতীয়
আজ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:১৮ এএম আপডেট: ২১.০২.২০২৫ ১২:৩৩ এএম  (ভিজিটর : ২০৮)
কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার। ফাইল ছবি

কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার। ফাইল ছবি

আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষার দাবিতে প্রাণদানের গৌরবোজ্জ্বল মাতৃভাষা আন্দোলনের আজ ৭৩ বছর পূর্ণ হলো। মায়ের ভাষার জন্য রক্ত ও প্রাণদানের ইতিহাসে আজকের এই দিনে বিশ্বের বুকে এই অনন্য ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ। পলাশ-শিমুল ফোটার দিনে তাইতো আজ গেয়ে উঠছে মন— আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?

১৯৫২ সালের এইদিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে উত্তাল ছাত্র-জনতার ওপর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পুলিশ নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে। এতে কয়েকজন ছাত্র শহিদ হন। তাদের মধ্যে সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর, জব্বার অন্যতম। তাই দিনটিকে শহিদ দিবস বলা হয়ে থাকে। আর ২০১০ সালে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তাই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীদের জন্য গৌরবোজ্জ্বলের।

এদিকে দিবসটিকে ঘিরে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। আজ রাত ১২টা এক মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরিসহ আজিমপুর কবরস্থানে শহিদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে।

মহান শহিদ দিবস ও ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারে পুস্পস্তাবক অর্পন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও রাষ্টপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস

১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠা প্রখম শহিদ মিনার

১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠা প্রখম শহিদ মিনার


তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে প্রথম ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি এর চরম প্রকাশ ঘটে। ওইদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর নির্বিকারে গুলি চালায়। এতে কিছু ছাত্র শহিদ হন। এ ঘটনায় নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসেন।

তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। ভাষা শহিদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। ১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন বিল’ পাস হয়। যা কার্যকর করা হয় ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ থেকে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি

১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙালি রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন। সে সময় সেক্রেটারি জেনারেলের প্রধান তথ্য কর্মচারী হিসেবে কর্মরত হাসান ফেরদৌসের নজরে এ চিঠিটি আসে। তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ জানুয়ারি রফিককে অনুরোধ করেন, তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোনো সদস্য রাষ্ট্রের কারও কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন। পরে রফিক, আব্দুস সালামকে সঙ্গে নিয়ে ‘মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান। এতে একজন ইংরেজিভাষী, একজন জার্মানভাষী, একজন ক্যান্টোনিজভাষী, একজন কাচ্চিভাষী সদস্য ছিলেন। তারা আবারও কফি আনানকে ‘এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ডে’র পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখেন এবং চিঠির একটি কপি ইউএনওর কানাডীয় দূত ডেভিড ফাওলারের কাছেও প্রেরণ করা হয়।

১৯৯৯ সালে তারা জোশেফের সঙ্গে ও পরে ইউনেস্কোর আনা মারিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। আনা মারিয়া পরামর্শ দেন, তাদের প্রস্তাব পাঁচটি সদস্য দেশ– কানাডা, ভারত, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড এবং বাংলাদেশ থেকে আনতে হবে। তারপর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিতে ২৯টি দেশ অনুরোধ জানাতে কাজ করেন। পরে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেখানে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

‘এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ’– এমন একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয় ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে। সেখানে এ প্রস্তাব উত্থাপন করে বাংলাদেশ।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  মহান শহিদ দিবস   আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ঈদ উদযাপনে অটোরিকশার কদর
সিলেটের চা বাগানগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়
ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে নিহত ২
কুষ্টিয়ায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদককে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি গ্রেফতার
চরফ্যাসনে সেচ্ছাসেবক দল নেতাকে রাতের আধাঁরে হত্যার চেষ্টা

সর্বাধিক পঠিত

বোচাগঞ্জে জহুরা ইন্ডাষ্ট্রিজের নিরাপত্তা কর্মীদের বেধে ১১টি গরু চুরি
ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে পৃথক স্থানে সংঘর্ষে আহত ৩০
গজারিয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের সংঘর্ষে আহত ৮
তাড়াশে মোটরসাইকেল-বাইসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১
মেলায় পুতুল নাচের নামে অশ্লীলতা, প্যান্ডেল গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

জাতীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: kholakagojnews@gmail.com, kholakagojadvt@gmail.com

© 2024 Kholakagoj
🔝
close