অগ্নি
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফায়ার কোড তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও
সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আলী আহম্মেদ
খান।
বুধবার
(৬ মার্চ) সকাল ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদর দফতরের
কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত ‘অগ্নি দুর্ঘটনা, বর্তমান পরিস্থিতির গভীরতা এবং
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের করণীয়’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক এ কথা বলেন
তিনি।
ফায়ার
সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন
উদ্দিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ (সাবেক মহাপরিচালক),
অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান (ডিজস্টার সাইন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্স,
ঢাবি), অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট), বাপার সহসভাপতি
স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব ও ইসাবের সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতি। বৈঠকে
অতিথিরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিসের করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন মতামত ও
পরামর্শ প্রদান করেন।
বৈঠকে
স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব বলেন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন অংশীদারি
প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে ঢাকাসহ সারাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন
চিহ্নিত করতে হবে এবং চিহ্নিত ভবনের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করার সাথে সাথে
নির্দিষ্ট ভবনের সামনে তা প্রকাশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল (অব:) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল
ডিফেন্স যেন নিয়মিত মোবাইল কোর্ট করতে পারে এজন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা
উচিত। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস-এর সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইনগত
অসামঞ্জস্য/বিরোধ দ্রুত সমন্বয় করা প্রয়োজন।
ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল (অব:) আলী আহম্মেদ খান বলেন, শহর কেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ফায়ার
স্টেশন নির্মাণসহ ফায়ার সার্ভিসকে দুর্ঘটনার ধরনভেদে স্পেশাল টিম তৈরি করতে
হবে। এছাড়া রাজউক, সিটি করপোরেশন বা ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের
মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। অগ্নি দুর্ঘটনা
প্রতিরোধে ফায়ার কোড তৈরি করার পরামর্শ দেন তিনি।
অধ্যাপক
ড. জিল্লুর রহমান বলেন, ঘণবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হাইড্রেন্ট লাইন বসানোর
ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ফায়ার সার্ভিসের স্থগিত বিধিমালা দ্রুত কার্যকর করতে
হবে। ভবনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি
অথরিটিতে ফায়ার সার্ভিস-এর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
অধ্যাপক
ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিয়ে যদি অকুপেন্সি
পরিবর্তন করে তাহলে তা ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে হবে এমন বিধান তৈরি করতে
হবে। এছাড়া বিএনবিসির কিছু ধারা যুগোপযোগী করা উচিত। অগ্নি নির্বাপণে
কার্যকর ভূমিকা রাখতে শহরের জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে বলে তিনি
পরামর্শ দেন।
নিয়াজ
উদ্দিন চিশতী বলেন, শুধু অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম কিনে প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার
করলে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে না। অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম মানসম্মত
কিনা তা যাচাই করতে হবে, যেন তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।