আখেরি মুনাজাতে মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চরমোনাই দরবার শরিফের তিন দিনব্যাপী বাৎসরিক মাহফিল। এবারের মাহফিলে আগত ১০ জন মুসল্লি মৃত্যৃবরণ করেছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন চারজন বলে জানিয়েছে চরমোনাই মাহফিল মিডিয়া উপকমিটি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের মাহফিল।
সমাপনি বক্তব্যে তিনি বলেন, আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই তিনি সাধারণ মানুষ বা আলেম, মুফতি ও পীরের কোনো মূল্য নেই। সর্বদা নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্বভাব ও তাকাব্বুরি পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সব প্রকার নেশাজাত দ্রব্য থেকে নিজেকে ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি মাহফিল বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির দেওয়া লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। মোনাজাতে ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি কামনা করেন। এ বছর মাহফিলে মূল ৭টি বয়ানের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করেন বাংলাদেশসহ সৌদিআরব, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিসর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও তুরস্কের বিশিষ্ট ওলামায়ে কিরাম।
মাহফিল মিডিয়া উপকমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতুল্লাহ জানিয়েছেন, মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ১০ জন বার্ধক্যজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তারা হলেন, মুন্সিগঞ্জ নিবাসী মো.আলাল খালাশি (৭২), পাবনা নিবাসী আব্দুল জলিল খান (৬৫), গাজীপুর নিবাসী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বেপারী (৫০), চুয়াডাঙ্গা নিবাসী মো. ওসমান (৫০), নীলফামারী নিবাসী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম (৬০), চাঁদপুর নিবাসী আলি আহম্মদ (৫৫), বগুড়া নিবাসী মো.আব্দুল হামিদ (৬৫), চাদপুর নিবাসী মো.আইউব আলী (৬০), নারায়ণগঞ্জ নিবাসী মো. আলতাফ হোসেন (৬৫), নরসিংদী নিবাসী মো.আবুল কালাম(৪২)। সবার জানাজা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। মাহফিল উপলক্ষ্যে স্থাপিত অস্থায়ী হাসপাতালে এ বছর প্রায় ৩ হাজারের বেশি মুসল্লির চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাহফিলে ৪ জন অমুসলিম পীরসাহেব চরমোনাই ও শায়খে চরমোনাইয়ের হাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জোহরের নামাজের পর শুরু হয়েছিল বাৎসরিক মাহফিল।
কেকে/এআর