লক্ষ্মীপুরে দীর্ঘ ২৮ বছর পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল, নিষিদ্ধ কিংবা আওয়ামী শাসনামলে কোণঠাসা হয়ে যাওয়া দলটি হাসিনা পতনের পর এমন বড় পরিসরে সমাবেশ সফল করেছে। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিল সহকারে জড়ো হয় সমাবেশস্থলে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যখন তারা ক্ষমতায় থাকে তখন রাজা, ক্ষমতা হারালে গর্তের ইঁদুর।
শনিবার (২২ই ফেব্রুয়ারি ) বেলা ১১টায় আদর্শ সামাদ স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আয়োজনে ও লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমির মাস্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাক্তার শফিকুর রহমান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের আগমনে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে লক্ষ্মীপুর শহরজুড়ে। লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত গণজমায়েতের মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় ১১ জন প্রাণের বিনিময় লক্ষ্মীপুর ৪ আগস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে সেই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। মানবিক ডক্টর ফয়েজ আহমেদের কথা স্মরণ করেন। কুরআন এবং সুন্নাহর ভিত্তিতে মানবিক সমাজ গঠনে দেশের সব মানুষের সহযোগিতা চাই। আগামীর সুন্দর ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হলো, কিন্তু ফ্যাসিবাদের কঠিন সাক্ষী আজহারুল ইসলাম মুক্ত হলেন না কেন, সরকারের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, গত ১৩ বছর ধরে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম।
আজহারুল ইসলামকে কারাগারে রেখে জামায়াত নেতাদের বাইরে থাকা সম্ভব নয়। ‘এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হতে ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে হাজির থাকবেন দলটির আমির তিনি মঞ্চে এ ঘোষণা দেন। এ সময় বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি হচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে শহিদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে তরুণ সমাজ আবারো যুদ্ধে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরমান, বায়োফার্মা ফার্মাসিউটিক্যাল এর কর্ণধর আনোয়ারুল আজিম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, জেলা জামায়াতের সাবেক অমির মো. হাসান উজ-জামান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট নাজির আহমেদ, এআর হাফিজ উল্যা, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, শহর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান ও জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর জনসমাবেশ হয়েছিল। ঠিক ২৮ বছর পর শনিবার আরেকটি ঐতিহাসিক জনসমাবেশ হয়েছে।
কেকে/এএস