কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট নিরসন, সময় অপচয় ও বাড়তি খরচ রোধে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি ও খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীর দশমিনায় সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। এ ছাড়া কৃষকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগেও বাড়ছে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে কৃষি বিভাগের খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় শুধু বীজ সহায়তা নিয়ে ৭০ জন কৃষক ৫০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো চাষাবাদ করেছিলেন।
সেখানে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বোরো মৌসুমে একই গ্রামে সরকারি কৃষি প্রণোদনার আওতায় ৮০ জন কৃষক ৫০ একর জমিতে করেছেন সমলয় পদ্ধতিতে বোরো চাষ। প্রণোদনাটির আওতায় কৃষকদের মাঝে এবার সাড়ে ৪ হাজার প্লাস্টিকের ট্রে-সহ ৯ টন সার, ৬০০ কেজি ব্রি-৯২ উচ্চফলনশীল জাতের ধান বীজ প্রদানসহ রোপণের খরচ বহন করছে কৃষি বিভাগ।
পাকার পর ওই প্রণোদনার আওতায় কৃষি বিভাগ কর্তনের খরচও বহন করবে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে কৃষি বিভাগের খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় শুধু বীজ সহায়তা নিয়ে একই গ্রামের ৬০ জন কৃষক আরও ৫০ একর জমিতে এবং ৩০ জন কৃষক নিজেদের খরচে ২০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো চাষাবাদ করছেন। ফলে চলতি অর্থবছরে উপজেলায় ১২০ একর জমিতে চলছে এ পদ্ধতিতে বোরো চাষাবাদ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ জানান, জমির উপরিভাগের মাটির সঙ্গে জৈব সারের সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধান বীজ বপন করা হয়। এতে বাড়তি সারের প্রয়োজন হয় না। এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে জমির পরিমাণ কম লাগে। তাই এ এলাকায় সমলয় পদ্ধতিতে বোরো চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
দশমিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ বলেন, কৃষকরা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই প্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন। আমরা আশা করি, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আরো উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। কৃষকের শ্রমিক সংকট ও উৎপাদন খরচ কমে যাবে। ধান চাষে সমলয় পদ্ধতি ও আধুনিক যন্ত্র সম্প্রসারণে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ দিবসসহ নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
কেকে/এএস