মা-বাবার স্নেহ-ভালোবাসায় বড় হওয়ার কথা ছিল ১৬ মাসের নিষ্পাপ শিশু আব্দুল্লাহর। কিন্তু তার ভাগ্যে জুটল নির্মম পরিণতি। নিজের পিতার হাতেই তাকে হারাতে হলো পৃথিবীর আলো! কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘটেছে হৃদয়বিদারক এ হত্যাকাণ্ড, যেখানে শিশুপুত্র হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই পিতা আবু নাইমের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা ঘাতক পিতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
শিশুটির মা শাহিদা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামীই আমার সন্তানকে হত্যা করেছে! আমি তার ফাঁসি চাই।’ তিনি জানান, আগের দিন থেকেই শিশু আব্দুল্লাহ অসুস্থ ছিল। সকালে তিনি স্বামীকে জানান, ছেলেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। কিন্তু স্বামী তাকে বাড়িতে থাকতে বলে নিজেই শিশুটিকে নিয়ে বের হন। এরপর মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পরেই বাড়িতে মৃত সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
স্থানীয়রা জানান, আবু নাইম শুরু থেকেই আব্দুল্লাহকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করছিলেন। এমনকি একবার গলা টিপে হত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত নিষ্পাপ শিশুটি পিতার নির্মমতার শিকার হলো।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত পিতাকে আটক করা হয়েছে। শিশুটির মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিশুটির মায়ের বুকফাটা কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। স্থানীয়রা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা সমাজের বিবেককে নাড়া দেয় নিঃসন্দেহে। দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেন নিশ্চিত হয় এটাই সবার চাওয়া।
কেকে/এএস