রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১১ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: বাধ্যতামূলক অবসরে চার ডিআইজি      ভারতে বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান      বাধ্যতামূলক হচ্ছে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল      ভারতের দিকে তাকিয়ে আ.লীগ নেতারা      কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার      হামাস মুক্তি দিলেও, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু      মাথায় লাল কাপড় বেঁধে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা      
খোলাকাগজ স্পেশাল
গণপরিবহন নৈরাজ্যে ভুগছে ঢাকাবাসী
খোলা কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:২১ এএম  (ভিজিটর : ৪১)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

রাজধানীবাসীর কাছে দিন দিন অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠছে গণপরিবহন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা। শুধু তাই নয়, ভোগান্তির তালিকা দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এখানকার পরিবহন ব্যবস্থা, রাস্তার সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। যাচ্ছেতাইভাবে সবকিছু চলাটাই যেন অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। নাগরিক সবচেয়ে অসহায় বোধ করে পরিবহনের জন্য অপেক্ষার সময়। 

অনিয়ম আর নৈরাজ্যের বেড়াজালে রাজধানীর গণপরিবহন। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, অসুস্থ প্রতিযোগিতায় অতিষ্ঠ সাধারণ যাত্রীরা। সঙ্গে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য। পরিবহন মালিকদের দাবি, মালিক-শ্রমিকের দ্বন্দ্বে কার্যকর করা যাচ্ছে না সরকারি উদ্যোগ। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরোনো সংস্কৃতি বদলে গণপরিবহন ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। 

এদিকে এ শহরে রোজকার যাতায়াতে পরিবহন বলতে ভরসা জরাজীর্ণ লোকাল বাস। নগরীতে চলার পথে যার আরেক নাম ভোগান্তি। নিয়মের তোয়াক্কা না করে ছুটে চলাই এখানে নিয়ম। বেপরোয়া গাড়ি চালানো, চালক-হেলপারদের দৌরাত্ম্য আর অনিয়ম গণপরিবহনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। যা থেকে নিস্তার নেই সাধারণ যাত্রীদের। 

রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে গাড়ি থামানো নিষেধ। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন কোম্পানির বাস যানজট সৃষ্টি করে যাত্রী তোলায় ব্যস্ত। দেখেও দেখার কেউ নেই। নিরুপায় যাত্রীরা। 

গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা দুঃসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে অনেক আগেই। কোথাও যাওয়ার জন্য নাগরিকদের রাস্তায় নেমেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তাড়া আছে কিন্তু যানবাহনের তীব্র সংকট। অফিসে যাওয়া, বাচ্চার স্কুল, বিয়ে-দাওয়াত, পার্টিতে যাওয়া, এমনকি রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া- প্রয়োজনীয় কোনো গন্তব্যেই যে সময়মতো পৌঁছানো যাবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। বাসে ওঠতে গেলে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ট্যাক্সিক্যাব অপ্রতুল, ভাড়াও অতিরিক্ত। সিএনজিচালিত অটোরিকশা মিটার বহির্ভূত অধিক ভাড়া নিয়েও প্রয়োজনীয় গন্তব্যে যেতে চায় না। এর বাইরে বিকল্প যানবাহনও অপ্রতুল। এ অবস্থায় মানুষজনের ভোগান্তির কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। যানজটের কারণে তো রাজধানী স্থবির হয়ে থাকে অধিকাংশ সময়।

যাত্রীদের একজন বলেন, ‘একদমই সন্তুষ্ট না আমরা। যানজট বেড়ে গিয়েছে অনেক।’ আরেকজন বলেন, ‘যেখানে বাস দুই মিনিট থামার কথা সেখানে ১০ মিনিটে দাঁড়িয়ে থাকে এইটা আমাদের জন্য সমস্যা তো।’ তবে চালকরা বলছেন, নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে যাত্রীরা বাসে ওঠা-নামা করতে না চাওয়ায় এমন পরিস্থিতি। চালকদের একজন বলেন, ‘যাত্রী যদি নিয়ম মানে তাহলে আমরাও মানব।’ চালকদের আরেকজন বলেন, ‘আমাদের তো বাস রাখার একটা স্ট্যান্ড দরকার সেটার তো কোনো কিছুই পাচ্ছি না।’ 

বাসের এমন অনিয়মের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় হঠাৎ জুড়ে বসেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে ২৪ এর শুরু থেকেই বাড়তে থাকে যার দাপট। গেল বছরের মাঝামাঝির পর যা দখল নিতে থাকে ঢাকার মূল সড়কের। যা দিন দিন যানজট বাড়িয়ে গতি কমাচ্ছে রাজধানীর। যাত্রীদের একজন বলেন, ‘অটোরিকশা যেটা মেইন রাস্তায় চলার কথা না সেটা চলছে। প্রতিদিন ৬-১০ জনের পা ভাঙছে।’ 

ট্রাফিক পুলিশের একজন বলেন, ‘প্রথমত তাদেরকে বলছি সরে যেতে। যত্রতত্র গাড়ি না রাখতে। যদি না শুনে তারপর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০০৫ সালে কৌশলগত পরিপত্র তৈরি হয়। তবে দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও কাঠামোর মধ্যে আনা যায়নি। সে সময় ১২৫টি রুটে গণপরিবহন চলাচলে রুট পারমিট থাকলেও বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩শ’রও বেশি। এতে বাড়ছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল হক, ‘হাতিরঝিলে সাড়ে ৮ কিলোমিটারের একটা সার্কিট আছে সেখানে একটা কোম্পানি চলে এবং একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে যাত্রী ওঠা নামা করে। চালক বেতনভুক্ত। একই জিনিস কিন্তু গুলশানে আছে।’ 

পরিবহন নেতাদের স্বীকারোক্তি, মালিক-শ্রমিক বিরোধিতায় আলোর মুখ দেখছে না সরকারের উদ্যোগ। কয়েক দফায় কাউন্টার পদ্ধতিতে বাস চলাচল ও টিকিট ব্যবহারের কার্যক্রম হাতে নিলেও তা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে। 

ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন, ‘মালিকরা -শ্রমিকরা ৫০ শতাংশ। সব মালিক শ্রমিক না। এরা গোপনে বিরোধিতা করে আমাদের। কারণ এ মালিক-শ্রমিকরা গত ১৪ বছর ধরে গাড়িগুলো চুক্তিভিত্তিক চালায়। পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনার জন্য যা যা করণীয় তা আমরা সহযোগিতা করব। আমরা কথা দিয়েছি এই সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা দরকার।’ 

পরিবহন বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, বিগত সরকারগুলো রাজনৈতিক স্বার্থে পরিবহন খাতকে ব্যবহার করলেও পুরোনো সংস্কৃতি বদলানোর সময় এসেছে। গণপরিবহন সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে প্রকৌশল ও কারিগরি জ্ঞানকে গুরুত্ব দেয়াসহ সমস্যার মূলে হাত দেয়ার তাগিদ তাদের।

ঢাকার বাস কবে নির্ধারিত রুট ধরে চলাচল করবে আর কবেই বা ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে? এমন প্রশ্ন যখন নগরবাসীর মনে, তখন সরকারি সংস্থা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের কী উদ্যোগ? 

ডিটিসিএয়ের ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম বলেন, ‘মারামারি করে সে রাস্তায় জ্যামের সৃষ্টি করে। এর থেকে আপনি বেতন দিয়ে চালান সেটা মোটিভেশনের বিষয়। সময়ের ব্যাপার একটা। চালকদেরও বোঝার বিষয়। আমরা এইটা নিয়ে কাজ করছি। তাই বলে এখনই দৃশ্যমান কিছু দেখা যাবে তা কিন্তু না। দুই সিটি করপোরেশন নীতিমালা খসড়া তৈরি করছে।’

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

টঙ্গীতে আ.লীগের নেত্রীসহ পাঁচজন গ্রেফতার
বাধ্যতামূলক অবসরে চার ডিআইজি
কেশবপুরে নাক, কান ও গলাবিষয়ক স্বাস্থ্য ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
ভারতে বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান
বোরো চাষে পানির মহা সংকটে কুষ্টিয়ার লক্ষাধিক কৃষক

সর্বাধিক পঠিত

শাবি ক্যাম্পাসে কর্মীসভার অনুমতি না পাওয়াকে ষড়যন্ত্র বলছে ছাত্রদল
বাকৃ‌বি‌তে জন্ম নি‌রোধকসহ ৫ ছিনতাইকারী আটক
লোহাগাড়া প্রবাসী মানবিক ফাউন্ডেশনের ফ্রি চিকিৎসা সেবা
বৈষম্যবিরোধীদের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হলেন খোলা কাগজের আব্দুর রউফ পাভেল

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝