ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে স্কুলে না গিয়েও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও বেতন ভাতাদি উঠানোর অভিযোগ উঠেছে বাঞ্ছারামপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে না এসেও কিভাবে নিয়মিত স্বাক্ষর প্রদান এ নিয়ে এলাকায় তৈরি হয়েছে নানা সমালোচনা।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, মীর রফিকুল ইসলাম পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ
সম্পাদক ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যালয়ে না এসে সংশ্লিষ্টদের
যোগসাজসে হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন। এছাড়াও বেতন ভাতাসহ সকল
ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের
মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষক বাঞ্ছারামপুরে ছাত্রদল নেতা নয়ন হত্যা মামলার তালিকাভূক্ত আসামী। তিনি সাবেক এমপি ক্যা. তাজ ফুটবল একাডেমির কর্ণধার। তিনি বিবাহিত হলেও একাধিক পরকীয়ার সম্পর্কে নিজেকে জড়িয়ে নিতেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ওয়াসিফা আক্তার বলেন, আমরা রফিক স্যারকে অনেকদিন ধরে বিদ্যালয় দেখিনা, বিশেষ করে ৫ই আগস্টের পর থেকে উনি স্কুলেই আসেন না।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামসুর রহমান মুঠো ফোনে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। যদি এমনটা হয়ে থাকে তিনি বিদ্যালয়ে না এসেও স্বাক্ষর করেন আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে বলব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল আজিজ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর তিনি একবার মেডিকেল ছুটি কাটিয়েছেন এবং মাঝখানে ওমরা হজেও গিয়েছিলেন। বিদ্যালয়ে না এসে নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই, এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ভিজিট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নুর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, ‘এমন নেক্কারজনক ঘটনা যদি ঘটে অবশ্যই সেই শিক্ষককে শাস্তি পেতে হবে। তাকে যারা এতোদিন রক্ষা করে আসছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর রফিকুল ইসলামকে মুঠোফোন (হোয়াটসঅ্যাপ) ফোন করলে তিনি বলেন, আমাকে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি আজ ঢাকায় ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত। স্কুলে না গিয়ে কিভাবে স্বাক্ষর করছেন, তার উত্তর তিনি দেননি।
কেকে/ এমএস