সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১২ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: নিজেকে কারাগারে পাঠানোর আর্জি, জামায়াত আমিরের      ১৬ বছর পর আবারও সম্প্রচারে আসছে চ্যানেল ওয়ান      পদত্যাগ করতে রাজি জেলেনস্কি      বড় রদবদলেও গতি নেই প্রশাসনে      জার্মানির নির্বাচনে জয়ী ফ্রেডরিক মারৎজের দল      স্থানীয় নির্বাচনে সুযোগ খুঁজবে আওয়ামী লীগ       যারা দেশকে অস্থিতিশীল করছে, তাদের ঘুম হারাম করে দেব : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা      
খোলাকাগজ স্পেশাল
বড় রদবদলেও গতি নেই প্রশাসনে
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫৭ এএম  (ভিজিটর : ৪১)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বর্তমানে সচিব নেই। এসব দফতরে দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত সচিবরা সচিবের রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। মাঠ প্রশাসনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ জেলা প্রশাসক (ডিসি)। বিভাগের সর্বোচ্চ পদে কর্মকর্তা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজেও নেমে এসেছে ধীরগতি। এসব মন্ত্রণালয়, বিভাগের কাজের গতি বাড়াতে কর্মকর্তা নিয়োগের কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। তিনি বলেছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে আরো নয় কর্মকর্তাকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী এক-দুদিনের মধ্যে আরো নয়জন কর্মকর্তাকে সচিব নিয়োগ দিয়ে ফাঁকা মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হচ্ছে।’ 

সিনিয়র সচিব আরো বলেন, ‘আমরা চারটি এসএসবি মিটিংয়ে ১২ জন সচিবকে সিলেক্ট করতে পেরেছি। কত কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের নির্বাচন করতে হয়েছে। যারা সচিব হচ্ছেন তারা। অধিকাংশই বঞ্চিত ও যোগ্য। কেউই চুক্তিভিত্তিক না, সবাই চাকরির ভেতর থেকেই সচিব হচ্ছেন।’ 

এগুলো হলো সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, বাস্তবায়ন প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সচিবহীন। 

সাবেক ডিসিদের বিষয়ে যা বললেন : বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের কাউকে ওএসডি, কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। আরেকটি বিষয় হলো, যারা অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ আছে, সে ব্যাপারে বিভিন্ন সংস্থা এবং নিজস্ব ব্যবস্থায় যদি দেখা যায় ঘটনা সত্যি সত্যি ঘটেছে, শুধু সেই অভিযোগগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হবে। এটা সাধারণীকরণ করা হবে না। যাদের নামে অপপ্রচার আছে বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন বা এ ধরনের কিছুই করেননি, সাময়িকভাবে ওএসডি হয়েছেন, তারা খুব সাধারণ জীবনযাপন করবেন, এতে কোনো সমস্যা না। এখানে সরকারের পক্ষপাত নেই। সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে কাজটি করবে, যাতে একজনও নিরীহ কর্মকর্তার যেন কোনো অসম্মান না হয়।’ 

২০২৪ সালের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সাবেক জেলার প্রশাসকদের (ডিসি) বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে পুরো তালিকা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো আসার পর বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে চারজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি আছে। সে কমিটিতে এগুলো বিশ্লেষণ করা হবে এবং তা ধীরে সুস্থে হবে। পক্ষপাত বা কোনো কিছুর বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না। সব সিদ্ধান্ত হবে নিয়মনীতির মাধ্যমে। একজন কর্মকর্তাও যেন ক্ষতিগ্রস্ত (ভিকটিম) না হন, সেটি দেখা হবে।’ 

প্রশাসনে অস্থিরতা, চুক্তিতে নিয়োগ আগের ধারায় : অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রায় সাড়ে ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও গতি আসেনি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চুক্তিতে থাকা কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিল করলেও বর্তমান সরকার নিজেরাই একের পর এক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে চলেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনে বড় কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। যা হচ্ছে নিয়মিত (রুটিন) কাজ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিল, চুক্তিতে থাকা সব কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হবে। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ১২ মন্ত্রণালয়ে দুবছর মেয়াদে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে চুক্তিভিত্তিক। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদে, কৃষি, বিটিআরসি, সিটি করপোরেশনেও চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ছয় থেকে আট বছর আগে যেসব কর্মকর্তা সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন, তাদের চুক্তিতে সচিব পদে বসানো হচ্ছে। বয়সের ভারে তাদের অনেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ। আবার তাদের সঙ্গে বর্তমান কর্মকর্তাদের যোগাযোগ নেই। প্রশাসনের অনেক কিছু তাদের অজানা, অনেক কর্মকর্তাকে তারা চেনেন না। এ কারণে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর একদিকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করছে; একই সময়ে চুক্তিতে নতুন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, সরকার চাইলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ঢালাওভাবে এ নিয়োগ দিচ্ছে। তদবিরে কারো কারো পছন্দের কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে যাচ্ছেন। এটি দৃষ্টিকটু। এতে প্রশাসনের কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। 

এদিকে শূন্যপদ পূরণে তেমন তোড়জোড় নেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কোথাও কাউকে পদায়ন করার পরই আদেশ বাতিল করার ঘটনাও ঘটছে। পদায়ন ও পদোন্নতির কাজে দক্ষতা দেখাতে না পারলেও, উল্টো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা নানা বিতর্কে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন। এদিকে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সিনিয়র সচিব ও সচিব পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়েও আছে সমালোচনা এবং অসন্তোষ। অনেকে বলছেন, অতীতের সরকারগুলোর পথেই হাঁটছে এ সরকার। 

এদিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অত্যন্ত ধীর। এসব মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনতে সংশ্লিষ্ট সচিবরা দক্ষতা দেখাতে পারছেন না। কেউ কেউ হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সচিব পদে বড় ধরনের রদবদল আনা হলেও প্রশাসনে কাজের গতি বাড়েনি। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পেরও একই দশা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে কয়েক ধাপে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাদের পদায়নও করা হচ্ছে। নতুন কর্মকর্তারাও সরকারি কাজের গতি বাড়াতে এখন পর্যন্ত তেমন সফল হননি। 

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নিজেকে কারাগারে পাঠানোর আর্জি, জামায়াত আমিরের
ভালুকায় প্রাইভেটকার চাপায় অটোচালক নিহত
কুলিয়ারচরে জামায়াতের দাওয়াতি সভা অনুষ্ঠিত
গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ
মেয়ের জামাইয়ের প্রতারণার শিকার বয়োবৃদ্ধা নারী

সর্বাধিক পঠিত

পুত্র সেজে ভাতিজা তোলেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, জড়িত ইউপি সচিব
সায়ান রিসোর্টের আড়ালে নারী ও মাদক ব্যবসা
আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে পাবিপ্রবির ক্রিকেট ফাইনাল বন্ধ
শ্রীমঙ্গলে সাতপীরের ভুয়া মাজার নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ
শ্রীমঙ্গলে লাইব্রেরি ও শিশু উদ্যান দখলমুক্ত করার দাবিতে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝