গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ‘গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ’ বিষয়ক কমিউনিটি মতবিনিময় সভা এবং ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তরগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. বদরুজ্জামান বেপারীর সভাপতিত্বে তরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে গ্রাম আদালত বিষয়ক এই সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প’র আওতায় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালত কীভাবে গ্রামের জনগণকে সহায়তা করতে পারে এ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় অবহিত করা হয়।
গ্রাম আদালত উপজেলা সমন্বয়কারী আলতাফুর রহমানের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন তরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার, আলমগীর হোসাইন, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন খান, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাশির উদ্দিন, ইউপি সদস্য ইফতেখাইরুল ইসলাম, সায়েদুর রহমান দাদু, আবুল কালাম খান, নাজমুন্নাহার হাসিনা, পারুল, মরিয়ম বেগম, গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ টিপু, তরগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন অ্যাপোলো, তরগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদ আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত গ্রাম আদালতে ‘অল্প সময়ে-স্বল্প খরচে, সঠিক বিচার পেতে-চলো যাই গ্রাম আদালতে’ এ বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। গ্রাম আদালত অনধিক ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই।
গ্রাম আদালতে ফৌজদারী আইনে চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া বিবাদ, কলহ ও মারামারি, মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও অন্যায় আটক, ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেওয়া, কোনো নারীর শালীনতাকে অমর্যাদা বা অপমানের উদ্দেশ্যে কথা বলা, খারাপ অঙ্গভঙ্গি করা দেওয়ানি আইনে পাওনা টাকা আদায় সংক্রান্ত, স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায় সংক্রান্ত, কোনো অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় সংক্রান্ত নিষ্পত্তি করা যাবে।
গ্রাম আদালতে অল্প সময়ে স্বল্প খরচে এবং অতি সহজে বিরোধ ও বিবাদ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে। প্রতিনিধি মনোনয়নে আবেদনকারী ও প্রতিবাদী সমান সুযোগ পায়। পক্ষগণ নিজের কথা নিজে বলতে পারে, কোনো আইনজীবী দরকার হয় না। গ্রাম আদালতে সমঝোতার ভিত্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। এক বিরোধ থেকে অন্য বিরোধ সৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকে। পক্ষদয়ের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খুব সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পায়।
কেকে/এএম