সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১২ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার পদক বাতিল      তুরস্কের রাজনীতিতে যোগ দিলেন জার্মানি ফুটবলার ওজিল      কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা      দেউলিয়া হওয়ার পথে ৫০ শতাংশ ভারতীয়        নিজেকে কারাগারে পাঠানোর আর্জি, জামায়াত আমিরের      ১৬ বছর পর আবারও সম্প্রচারে আসছে চ্যানেল ওয়ান      পদত্যাগ করতে রাজি জেলেনস্কি      
অর্থনীতি
‘ভারতের নাগপুরে বিমানের অবস্থানের বিষয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে’
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৭:৫১ পিএম  (ভিজিটর : ৩৫)
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ভারতের নাগপুরে জরুরি অবতরণ করে। তবে সেদিনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভুলভাবে ছড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ঘটনা ভিন্নভাবে প্রকাশ করাকে ‘প্রোপাগান্ডা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

রোববার ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সেদিনের প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-দুবাই রুটের নির্ধারিত ফ্লাইট বিজি-৩৪৭ ঢাকা থেকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ২২ টন কার্গো নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজটিতে দুইজন বৈমানিক, ১০ জন কেবিন ক্রু এবং ৩৯৬ জন যাত্রী ছিল।

যাত্রা পথে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের নাগপুর শহর অতিক্রান্ত হওয়ার সময় ক্যাপ্টেন পিছনের কার্গো কোম্পার্টমেন্ট থেকে ককপিটে ফায়ার সতর্কীকরণ সংকেত পান। এ সময় যাত্রীদের নৈশভোজ পরিবেশন করা হচ্ছিল। তখন ফ্লাইটের পাইলট-ইন-কমান্ড নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং উড়োজাহাজ পরিচালনার দিক নির্দেশানুযায়ী নিকটবর্তী ভারতের নাগপুরের ‘ড. বাবা সাহেব আমবেদকা’ বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৭ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করেন। বৈমানিক নাগপুরের বিমান অবতরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরই সব যাত্রীকে ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাগপুরে অবতরনের’ সিদ্ধান্তটি ইন-ফ্লাইট এনাউন্সের মাধ্যমে অবহিত করেন। ফ্লাইটটি নাগপুরে অবতরণের পর সব যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ১২ ক্রুসহ সর্বমোট ৪০৮ জনকে বিমানবন্দরে  যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি বাসে করে উড়োজাহাজটি থেকে আনুমানিক অর্ধ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বেশি সময়পার হলেও ওই ৪০৮ জনকে বিমানবন্দর টার্মিনালে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। এ সময় পানি এবং টয়লেট সুবিধার জন্য যাত্রীরা বার বার অনুরোধ করা সত্যেও ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা অনুমতির আনুষ্ঠানিকতার প্রসঙ্গ তুলে তা প্রদান করা থেকে বিরত থাকেন। এতে করে বিশেষভাবে বয়স্ক এবং নারী যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন। পরবর্তীতে রাত ১টার সময় টার্মিনালের যাত্রীদের লাউঞ্জে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল এর মাধ্যমে যাত্রীদের সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং সেইসাথে আশ্বস্ত করা হয় যে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রীদের সুবিধার্থে সকল বিষয়ের যাবতীয় খরচাদি বহন করবে। নাগপুর কর্তৃপক্ষ অবহিত করেন, এই বিপুল সংখ্যক খাবার প্রস্তুতের জন্য তাদের ৩-৪ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বোয়িং-৭৭৭ এর মতো বড় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ উক্ত বিমানবন্দরে নিয়মিত চলাচল করে না। বিমানের যাত্রীদের হোটেলে পাঠানের জন্য অনুরোধ করা হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অস্থায়ী ল্যান্ডিং পারমিট প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ করে। এ কারণে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের টার্মিনালেই থাকতে হয়।

এতে আরও বলা হয়, যাত্রীদের দেখাশোনা করার জন্য বিমানের দিল্লিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজারকে বলা হলে তিনি ইনডিগো এয়ার-এ করে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে নাগপুরে পৌঁছান। এর আগে অনুমানিক রাত ৩টার দিকে যাত্রীদেরকে পানি সরবরাহ করা হয়। সকাল ৭টার দিকে পানি ও চা দেওয়া হয় এবং সকাল সাড়ে ১০টায় নাশতা পরিবেশন করা হয়। নাগপুর ক্যাটারিংয়ের সীমিত সক্ষমতা থাকার কারণে নাস্তা দিতে সময় বেশি লেগেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম উড়োজাহাজের সব কার্গো ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহৃত হওয়ায় উক্ত উড়োজাহাজ দ্বারা যাত্রীদের দুবাইতে পরিবহন সম্ভব নয়- মর্মে মতামত প্রদান করেন।

সেই মোতাবেক বিমান ঢাকা অপারেশন্স কন্ট্রোল উদ্ধারকারী ফ্লাইটের পরিকল্পনা হাতে নেয় যা ঢাকা থেকে বিজি১২৬ (দোহা-চট্টগ্রাম-ঢাকা) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে নামার পর সকাল সাড়ে ৯টায় যাত্রার সময় পরিকল্পনা করা হয়।

ভারতের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পর বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ২৮মিনিটে উদ্ধারকারী ফ্লাইটটি যাত্রা শুরু করে এবং বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে নাগপুরে অবতরণ করে।

নাগপুর বিমানবন্দর রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষন কাজের জন্য দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থাকায় নাগপুরে অবতরনের পরপরই উদ্ধারকারী ফ্লাইটটির ক্যাপ্টেন অপেক্ষমান যাত্রীদের বিমানে আসন গ্রহণ এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাত্রীদের ব্যাগেজবহনকারী কন্টেইনার উদ্ধারকারী ফ্লাইটে লোড করার নির্দেশনা দেন। তবে যাত্রীরা উড়োজাহাজে আসন গ্রহণ করলেও নাগপুর একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর হওয়ায় বৃহদকার উড়োজাহাজের ব্যাগেজ কন্টেইনার লোড করার জন্য শুধুমাত্র একটি যন্ত্র এবং অপর্যাপ্ত কন্টেইনার ট্রলির কারণে লোডিং হতে কল্পনাতীত সময়ক্ষেপণ। ততক্ষণে রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে উদ্ধারকারী ফ্লাইটটি নাগপুর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে এবং নিরাপদে দুবাইতে অবতরণ করে।

নাগপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষাকালীন সময়ে যাত্রীদের দুপুরের খাবার উড়োজাহাজের অভ্যন্তরে পরিবেশন করা হয়। উড্ডয়নের পর যাত্রীদের জন্য রাতের খাবারও পরিবেশিত হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এছাড়া যাত্রীদের দুর্ভোগের সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সেগুলো হলো-

ভারতের নাগপুর একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা সীমিত।

ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরাপত্তা অনুমতির দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে যাত্রীদের টার্মিনালে না নিয়ে দীর্ঘ সময় বাসে অবস্থানের কারণে পানি এবং টয়লেটের ব্যবস্থা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত হন।

ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিমানের যাত্রীদের অস্থায়ী অবতরণের অনুমতি প্রদানে অস্বীকৃতি। ফলে বাধ্য হয়েই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ যাত্রীদেরকে হোটেলে না পাঠিয়ে টার্মিনালে অপেক্ষমান রাখতে বাধ্য হয়। 

ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ৩৯৬ জন যাত্রীর খাদ্য প্রস্তুতে অন্যান্য বিমানবন্দর সমূহের তুলনায় বেশি সময় নিয়েছে।
ভারতের নাগপুর বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট এর স্বল্পতার জন্য যাত্রীদের ব্যাগেজবাহী কন্টেনার লোডিং এ দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করে। ফলতঃ বিমানবন্দর বন্ধের পূর্বে উড্ডয়ন সম্ভব হয়নি।

টার্মিনালের অভ্যন্তরে যাত্রী লাউঞ্জে বিমানের দিল্লির স্টেশন ম্যানেজার প্রবেশের পাশ ইস্যুতে নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপন করায় যাত্রীবৃন্দের সঙ্গে সর্বোক্ষণ যোগাযোগ প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের স্থানীয় বিধিনিষেধ এবং নাগপুর বিমানবন্দরের সীমাবদ্ধতার কারণে উপরোল্লিখিত উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল।

স্যোশাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত প্রোপাগান্ডার বিষয়ে প্রতিবাদ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এয়ারক্রাফটের ভিতরে ভিডিও ধারণ নিষিদ্ধ থাকার পরেও নাগপুরের উক্ত উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে বর্তমান সরকার এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বিব্রত করার জন্য একজন নারী এবং একজন পুরুষ যাত্রী উক্ত ফ্লাইটের ভিতরে যাত্রী সাধারণের প্রতি উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে এবং ভিডিও ধারণ করে স্যোশাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তা প্রচার করে। উক্ত যাত্রীদ্বয় ফ্লাইটে ক্রমাগত উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করলেও অন্যান্য সম্মানিত যাত্রীরা তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি এবং ধৈর্য্য নিয়ে ফ্লাইটে অবস্থান করে কর্মরত ক্রুদের সহযোগিতা করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্মানিত যাত্রীদের ধৈর্য্য ধারণ এবং ফ্লাইটে ক্রুদের সহায়তা করার জন্য তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছে এবং উল্লিখিত প্রোপাগান্ডার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

সর্বোপরি নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত পরিস্থিতির কারণে সম্মানিত যাত্রীদের সঙ্গে ঘটে হওয়া অসুবিধাসমূহের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  ভারতের নাগপুর   বিমানের অবস্থান   প্রোপাগান্ডা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

দেড় শতাধিক আর্টিকেল নিয়ে লেখা বই ‘সালাত ও বিজ্ঞান’
‘জুলাই-আগস্টে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে বিএনপি’
আইইবির উদ্যোগে ‘এ স্ট্র্যাটেজিক পাথ টু রিফর্ম’ সেমিনার মঙ্গলবার
সড়ক দূর্ঘটনায় সালথার রাঙ্গারদিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিহত
টঙ্গীতে ট্রেনে কাটা পরে যুবকে মৃত্যু

সর্বাধিক পঠিত

চুয়াডাঙ্গায় নবদম্পতি স্বামীকে কুপিয়ে স্ত্রীর গয়না ছিনতাই
সড়ক দূর্ঘটনায় সালথার রাঙ্গারদিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিহত
হিজবুত তাওহীদ কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে আহত ১৫
‘ভাষার মাসে রক্ত ও রোগীর সেবা দিলো বাঞ্ছারামপুর ব্লাড ব্যাংক’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

অর্থনীতি- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝