ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নেত্রকোনা এবং ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ডাকাত দলের সর্দার মো. আলমগীর (৩৪) ও তার ভাই রাজীব হোসেন (২১)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোন, ৪ হাজার ২১০ টাকা, ২টি ছোড়া, ২টি রুপার আংটি, এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ডসহ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, রিমান্ডকৃত শহিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূলহোতা আলমীরকে নেত্রকোনার পূর্বাধলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আলমগীরের তথ্যের ভিত্তিতে তার ভাই রাজীবকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আন্তজেলা ডাক্তার চক্রের মূলত হোতা আলমগীর৷ আলমগীর দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আলমগীর প্রাথমিকভাবে বাস ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে।
তিনি আরো বলেন, লুন্ঠনের সময় শ্লীলতাহানি হয়েছে এমন তথ্য পেয়েছি। তবে প্রাথমিকভাবে বাস ডাকাতির সময় ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ চেষ্টার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার বলেন, মূলহোতা আলমগীরকে ৭ দিনের রিমান্ড এবং তার ভাই রাজীবকে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সাভারের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ ডাকাতে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সবুজ ও শরীফুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট নওরিন করিম। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে গত শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিন দিন পর শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নাটোরের বাসিন্দা ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৮/৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ইউনিক রোড রয়েলসের বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানি করার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে বাস থামিয়ে ডাকাতদল নেমে যায়। ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাস নিয়ে পুনরায় যাত্রা শুরু করেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার পর যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান।
কেকে/এএম