বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ঘোড়ার আগে গাড়ি চড়তে নেই। গ্রামে-গঞ্জে একটি কথা আছে পায়ের তলায় মাটি নেই। এই সরকার স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে পায়ের তলায় মাটি তৈরি করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা সংগ্রাম করেছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, নির্বাচনের জন্য। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করি নাই। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দেখতে চাই না। সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে অন্য কোন নির্বাচন নাই। সতেরো বছরে বিএনপির পাঁচ হাজার নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। এখনো অনেকে আহত অবস্থায় আছে। আমি নিজে তেরোবার জেল খেটেছি।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রো সিনেমা হল মোড়ে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে বিএনপি এ জনসভার আয়োজন করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, প্রশিক্ষিত একটি বিশেষ বাহিনীর লোক, যারা এই দেশে থাকে না। তাদের দিয়ে আমাদের দেশের ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করানো হয়েছে। আজকে দেশে খুন ডাকাতি ছিনতাই বেড়ে গেছে। যারা এই দেশেকে লুট করেছে তারাই ভারতে বসে বসে চক্রান্ত করছে কীভাবে দেশকে অশান্ত করা যায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সংস্কার সংস্কার করে কান ঝালাপালা করে তুলেছেন। কিন্তু হাতের কাছে যে সংস্কারটি করা প্রয়োজন তা করছেন না। আগষ্টের ২ অথবা ৩ তারিখ এদেশের কিছু কুলাঙ্গার ব্যবসায়ী সেদিন কি বলেছিলো বৈঠকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবে। এমনকি মৃত্যুর পরেও তারা একসঙ্গে থাকবে। ওইসব ব্যবসায়ীদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তাদের গ্রেফতার না করলে জীবনেও দ্রব্যমূল্য কমবে না। বিনা পয়সায় ফ্রিতে আপনাদের পরামর্শ দিয়ে দিলাম।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে অনেক কুলাঙ্গার আছে, তারা আজকে ঘরে বসে আছে। তারা ভারতের সাথে কথা বলে বাংলাদেশকে অস্থির করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অনেকে বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে দেশ চালানো যাবে না। অনেকে আবার তাদের অফিস পরিদর্শন করেছেন। এদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার পরেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেনো জাতি জানতে চায়। এই সরকারের এসব বিষয়ে একটি বিহীত করাউচিত।
জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বেনজির আহমেদ, বিএনপির সহ-আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভ্ইুয়া দীপু, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব।
জনসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খাঁন, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।
দীর্ঘদিন পরে বাধাহীন ও মুক্ত পরিবেশে বিএনপির জনসভা নিয়ে বেশ আগ্রহ ছিলো জেলাবাসীর। জনসভাকে ঘিরে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদেরও ব্যাপক প্রস্তুতি। এমনকি দীর্ঘদিন পরে জেলার অনেক নেতাকে মঞ্চে দেখা গেছে।
কেকে/ এমএস