অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেছেন, এখন আমরা আওয়াজ শুনতে পাই। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনো পরিকল্পনা করতে পারবেন না। আগে সংসদ নির্বাচন হবে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অর্থনৈতিক ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, গণতান্ত্রিক ঘাটতির উত্তরণ, নির্বাচনী রোডম্যাপের ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন দাবিতে ওই জনসমাবেশ আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
তিনি বলেন,‘সুযোগ বুঝে কোপ দিয়েন না, কোপ খাওয়ার মানুষ আমরা। ধৈর্য্য আমাদের আছে। ধৈর্যের বাধ যদি ভেঙ্গে যায় আল্লাহ ছাড়া বিএনপিকে দমিয়ে রাখার কোনো শক্তি নেই’।
তিনি আরো বলেন,‘রাতে রেডিওতে শুনেছি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন মেজর জিয়া (১৯৭১ সালে)। জিয়ার দলের আমি একজন একনিষ্ঠ কর্মী। আমার ডানে বামে বহু অত্যাচারিত, জেল খাটা ভাইয়েরা আছেন। হাসিনার অত্যাচার ভুলি নাই। যুবদল, ছাত্রদলের চোখ উপড়ে ফেলেছে, হাত কেটে দিয়েছে। আমার মা খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে পাঁচ বছর জেলে রেখেছে। আমি কি ভুলিতে পারি? সেই ষড়যন্ত্র আবার বিএনপির বিরুদ্ধে। নীলফামারীর ভাইয়েরা শক্ত হাতে যে দল আপনারা ধরে রেখেছেন। সেই দলের নেতাকর্মীদের আমি সাহস দিয়ে বলতে পারি, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীতে কোনো শক্তি নাই আমাদের খালেদা জিয়ার, শহীদ জিয়ার, তারেক জিয়ার দলকে আর ডুবাইতে পারবে না’।
জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন,‘বাংলাদেশে হাসিনাার মৃত ব্যক্তির ভোট আর চাই না। দিনের ভোট দিনে চাই, রাতে চাই না। আয়নাঘর চাই না, ডিবি হারুনের অত্যাচার আর চাই না। বিনা কারণে মামলায় জেল খাটতে চাই না।
জুলাই বিপ্লবের কথায় তিনি বলেন,‘ নেতা তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে। শুধু জুলাই আগস্টের বিপ্লব নয়, ১৬ বছর আমারা রাস্তায় থেকে আন্দোলন করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা মিছিল করেছি। আমরা হরতাল করেছি, অবরোধ করেছি তারই সফলতায় জুলাই আগস্টের ছাত্র বিপ্লব’।
জাতীয় পার্টি বিলিনের পথে মন্তব্য করে জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন,‘ক্যান্টনমেন্টে এরশাদের নাকি অসুখ, নড়তে পারে না, চড়তে পারে না বুড়া। সেখানে হিন্দুস্থানের এক স্বৈরাচার বললো ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচনে আপনাকে যেতে হবে। হাসিনাকে সহায়তাকারী সেই জাতীয় পার্টি এখন বিলীনের পথে। আমি জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে চাই না। শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই বর্তমান সভাপতি সম্পাদক মহোদয়কে। সামান্য টুকুও বেইমানি না করতেন, হাসিনার বাপের ক্ষমতা ছিল না বিএনপিকে বাদ দিয়ে এদেশে নির্বাচন করা’।
সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জহুরুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু মোহাম্মদ সোয়েম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রাহেদুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. মাহাবুব উর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আল মাসুদ চৌধুরী, ডোমার উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রেয়াজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান সুমন, ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
কেকে/ এমএস