প্রায় ৩.৫ একর জমির ওপর বিস্তীর্ণ এই বটতলা। সাতক্ষীরা শহর হতে মাত্র ২৫ কিলোমিটার গেলে দেবহাটা উপজেলা সদর। সেখানে রয়েছে হৃদয় ছোঁয়া ৪শত বছরের এক বটগাছ। ‘বনবিবি বটতলা’ নামে পরিচিত এই ঐতিহাসিক স্থানটি।
বটগাছের শাখা-প্রশাখা থেকে মাটির সঙ্গে শিকড় তৈরি করে এটি বিশাল আকার লাভ করেছে। বহু পুরাতন এই বটতলায় সাধু ও ঋষিদের ধ্যানের স্থান ছিল। এখানে বিভিন্ন দেবদেবীদের পূজা অর্চনা করা হতো।
বর্তমানে এখানে আর সাধু ঋষিদের ধ্যান করতে দেখা যায় না, তবে বিনোদনের জন্য অনেক নারী পুরুষ এখানে ভিড় জমায়। উপজেলা পরিষদ থেকে স্থানটি মাত্র কয়েক মিনিটের পথ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানটির চারপাশে এখন বসতি গড়ে উঠেছে। তাই ধীরে ধীরে এই বটতলাটি তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু উপজেলার ঐতিহ্যটি সে আজও ধরে রেখেছে।
ঐতিহাসিক এই বটতলায় প্রিয় জনকে সঙ্গে নিয়ে অনেক মানুষ আজও বেড়াতে আসে। ছায়া সুনিবিড়, পাখির কুজন মুখরিত, নয়নাভিরাম এই স্থানটিতে অবসর দিনের কিছুটা সময় এখানে বসে থাকলে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মনটা সতেজ হয়ে ওঠে। প্রকৃতিকর অপূর্ব দৃশ্য দেখতে দেখতে সময় কেটে যায়। স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে এই পর্যটন কেন্দ্রটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে এবং এখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সপ্তাহের ছুটির দিনে মনের ক্লান্তিগুলো দূর করার জন্য এবং প্রকৃতির সবুজ স্পর্শ পাওয়ার জন্য প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে সবুজে ঘেরা পাখির কুজন মুখরিত নয়নাভিরাম এই পর্যটন কেন্দ্রটিতে বসে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন।
স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, বনবিবির বটগাছ একটি ঐতিহাসিক স্থান ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ সেটি হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারিভাবে যদি এটি সংরক্ষণ করা যেত তাহলে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের পিপাসা মিটত ও সরকার রাজস্ব আদায় হতো।
দেবহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো আসাদুজ্জামান বলেন, বনবিবির বটগাছ নিয়ে অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে। যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে আজ সেটি ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আমরা খুলনা প্রত্নতত্ব বিভাগকে সংরক্ষণের জন্য বলেছি। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের বলেছেন।
কেকে/এএস