নোয়াখালীর হাতিয়া তমরদ্দি লঞ্চ ঘাটে আকলিমা বেগম (৩৩) ও নাসিমা বেগম (৩০) দুই নারী যাত্রীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ঘাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে।
রোববার (২ মার্চ) সকালে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন আহতদের মধ্যে আকলিমা বেগম নামে একজন।
আহত আকলিমা বেগম (৩৩) তমরুদ্দি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আঠারোবেকি গ্রামের বেলায়েত হোসেসের স্ত্রী ও নাসিমা বেগম (৩০) একই গ্রামের সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অভিযোগকারিনী আকলিমা বেগম তার বোন সহ ঢাকা থেকে হাতিয়া তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটে আসেন। সকাল ৯ টায় তারা লঞ্চ থেকে নামার সময় তাদের সাথে থাকা মালামালের অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে ইজারাদারের লোকজন। আকলিমা ও তার বোন মালামালের অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করার প্রতিবাদ করেন। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হলে সে টাকার রশিদ দিতে হবে বলেন আকলিমা। এতে ইজারাদরের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আকলিমা ও তার বোনকে বেদম মারপিট শুরু করে। এতে আকলিমা মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং তার বোনের নাসিমার পায়ে আঘাত পায়। এসময় অভিযুক্তদের একজন আকলিমার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। অনেকে তার শরীরের কাপড় খুলে শ্লীলতা হানির চেষ্টা করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এদিকে আহত অবস্থায় আকলিমা ও তার বোনকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে জরুরী বিভাগের ডাক্তার জানান, গুরুতর আহত আকলিমার মাথায় ৯ টি সেলাই দিতে হয়েছে। নাসিমা নামের অন্য একজনের পায়ে তিন টি সেলাই দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে করা মামলায় আকলিমা আসামী করেন ঘাটের ইজারাদার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি গোলাম মাওলা কাজল। এছাড়া একই ঘটনায় আসামী করা হয় নানা অপকর্মে দল থেকে বহিস্কার হওয়া উপজেলা বিএনপি সহ সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন নিজাম ও বহিস্কার হওয়া যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরকে।
জানা যায়, তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার হলেন গোলাম মাওলা কাজল। ৫ আগষ্টের পর উপজেলা বিএনপি নেতা আলমগীর তার নেতৃত্বে তমরদ্দি ঘাটের সকল কর্মকান্ড দখল করে নেন। পরবর্তীতে ইজারাদার আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজলের সাথে বিএনপি নেতা আলমগীর সমঝোতা হয়। সেই থেকে আলমগীর ঘাটের দায়িত্ব এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। ঘাটের প্রতিদিনের রোজগার আলমগীর ও গোলাম মাওলা কাজলের প্রতিনিধিরা বসে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।
ঘাটে নারী যাত্রীকে পিটানোর বিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত খোরশেদ আলম বলেন, আকলিমা নামে একজন ভোক্তভুগী থানায় মামলা দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এআর