প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সতর্ক করে বলেছেন, ভোট কারসাজি করে আপাতত জেতা গেলেও, দীর্ঘমেয়াদে তা দেশের, দলের এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
রোববার (২ মার্চ) জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়— ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে, ভোট সন্ত্রাস করে আপাতত জয় পাওয়া যায়। কিন্তু আখেরে নিজের, দলের এবং দেশের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনে। টেকা যায় না।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, কেউ যেন ভোট কারসাজির চেষ্টা না করেন। নির্বাচন কমিশন ১৮ কোটি মানুষের পাশে আছে, এবং নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন সিইসি নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, যদি দলগুলো সত্যিই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তাহলে তাদের লিখিত দিতে হবে যে তারা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবে এবং কোনো অনিয়ম হলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরো বলেন, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হলে দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হবে এবং নির্বাচন কমিশনের কাজও সহজ হবে।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হলে আমরা ইতিহাসের সঙ্গে বেইমানি করব। ভোট দেওয়া এখন শুধু অধিকার নয়, দায়িত্বও।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের স্বার্থে একমত হবে।
খোলা মাঠে ভোটকেন্দ্রের প্রস্তাব দিলেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, আমরা চারদিকে সংস্কার দেখছি, কিন্তু ইসির সংস্কার হবে না? আমি চাই, ভোট যেন খোলা মাঠে হয়, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
তবে অন্য এক কমিশনার এই প্রস্তাবকে অবাস্তব বলে মন্তব্য করেন।
অন্য নির্বাচন কমিশনারদের বক্তব্য
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, জনগণের অংশগ্রহণই নির্বাচনের বৈধতা নির্ধারণ করে। ভোটারদের মতামত প্রতিফলিত হলেই নির্বাচন সার্থক হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের কাজ হলো জনগণের আস্থা অর্জন করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ভোটার দিবস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা তথ্য ও ভোটারযোগ্যদের নিবন্ধন শেষ করে জুনের মধ্যে একটি ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
বাড়িবাড়ি হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার তালিকা থেকে ১৯ লাখ মৃতভোটারের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ৫৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৩ জনের।
ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে সংস্থাটির অতিরিক্ত সচিব, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকসহ সকল পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/এএম