ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সকল নৃশংসতার সঠিক নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দফতরের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই দেশে জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত সকল নৃশংসতার যথাযথ নথিভুক্তির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যদি এসব ঘটনার যথাযথ নথিভুক্তি না করা হয়, তাহলে সঠিক তথ্য জানা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, শাপলা চত্বরে আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের নিষ্ঠুরতা এবং বছরের পর বছর ধরে ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যথাযথ নথিভুক্তি জরুরি।
সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস বলেন, জনগণের ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ঘটনাসমূহ যথাযথ নথিভুক্ত করতে জাতিসংঘ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এটি এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ এবং সত্য প্রতিষ্ঠার একটি প্রক্রিয়া।
২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘ একটি অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি যে জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি প্রকাশ করা সহজ কাজ ছিল না, তবে যথা সময়ে এটি তারা প্রকাশ করেছে।
আবাসিক সমন্বয়কারী লুইস প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফোলকার তুর্ক আগামী ৫ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৫তম অধিবেশনে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ব্রিফ করবেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে রোহিঙ্গা সংকট পুনরায় বৈশ্বিক মনোযোগে আসবে, বিশেষ করে যখন এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ার বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি মাসে শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, যা অন্যান্য মৌলিক চাহিদার সঙ্গে যুক্ত।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করবেন। সফরকালে তিনি মানবাধিকার পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কেকে/এএম