সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫,
১৯ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
শিরোনাম: প্রাথমিকের ৬৫৩১ শিক্ষক নিয়োগে আর বাধা নেই       শাহজাদপুরে হোটেলে আগুন, ৪ মরদেহ উদ্ধার       কাঠগড়ায় কাঁদতে কাঁদতে কামাল মজুমদার বললেন, আর আ.লীগ করব না       রাজশাহীতে অ্যাম্বুলেন্স-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩      জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার খালাসের রায় বহাল      অনিয়ম অবহেলায় চলছে সদর হাসপাতাল      নারায়ণগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৮      
গ্রামবাংলা
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল
অনিয়ম অবহেলায় চলছে সদর হাসপাতাল
মো. নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজার
প্রকাশ: সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৯ এএম আপডেট: ০৩.০৩.২০২৫ ১০:৩২ এএম  (ভিজিটর : ১৪৯)

সাবেক সরকারের কিছু প্রেতাত্মা ও সাবেক সরকারের নেতাদের সহযোগী নার্স-ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনার ফলে দিন দিন অবহেলায় পরিণত হচ্ছে কক্সবাজার ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল। দিন দিন স্বাস্থ্যসেবা অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। জরুরি বিভাগে অনবিজ্ঞ নার্স ও ইন্টার্নি ডাক্তার দিয়ে চলছে জেলার ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি। যারা সিনিয়র ডাক্তার হিসেবে কর্মকরত আছেন তারা প্রাইভেট চেম্বার করতেই দিন পার করে দেওয়ার ফলে হাসপাতালে আসার সুযোগ পান না বলে জানা যায়। এই হাসপাতালে আসা রোগীরা অবহেলার শিকার হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কক্সবাজার সদর হাপাতালের তথ্য বাতায়নে দেখা যায়, ২০ জন কর্মকর্তা ও ৮ জন কর্মচারী নিয়ে চলমান রয়েছে এই হাসপাতালটি। এ তথ্যে কতজন নার্স রয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সেলিমের কাছ থেকে জানা যায়, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মোট ৫০ জন ডাক্তার  ও  ৩২৫ জন নার্স কর্মরত রয়েছে। যা  তথ্য বাতায়নে এসবের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

 সম্প্রতি লামা থেকে আসা এক রোগীর সঙ্গে থাকা আত্মীয়দের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায় লক্ষী নামের এক নার্সকে। অন্যদিকে গত পরশু রামু উপজলোর গর্জনিয়া ইউনিয়নের জকরিয়া নামের একজন জানান, মাথায় আঘাত নিয়ে আমার মামাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এনেছিলাম। কোনো রকম ব্যান্ডেজ করে দিয়ে প্রাইভেট হাসপালে ভর্তি করাতে বলেন। কারণ হিসাবে জানতে চাইলে একজন জানিয়েছে জনবল না থাকার কারণে সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।

এসব বিষয় স্বীকার করে ডাক্তার সাবুক্তিজিন মাহমুদ সোহেল জানান, আসলে অনেক সময় নাসর্রা রোগীদেন সঙ্গে খারাপ আচারণ করে তা আমরাও অবগত আছি। তাদের নিয়ে আমরা মাসিক বৈঠকের মাধ্যমে নার্সরা রোগীদের কিভাবে সুন্দর সেবা দিবে তা নিয়ে আলোচনা করি। তিনি আরো বলেন, আপাতত ইমাজের্ন্সি মেডিকেল অফিসারের পদ খালি রয়েছে। অথিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে ডাক্তার আশরাফুজ্জামান। ডাক্তার সংকট থাকার কারণে আমরা বেশ বেকায়দায় আছি।

জানা যায়, এই হাসপাতালে সাবেক সরকার আমলে যেসব কর্মকর্তা কর্মকচারী ছিল তা এখনো বহাল তবিয়তে থেকে অনেক কর্মচারী নিজেই হাসপাতাল ঠিকাদারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এবং একেক জন দেড়যুগের চাইতে বেশি সময় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে প্রধান সহকারী তুষার পাল ও হিসাবরক্ষক প্রবীর পালের সিন্ডিকেট বেশ শক্ত বলে জানা গেছে। তারা দীর্ঘ দেড় যুগ এই হাসাপাতালে তাকার কারণে বেশ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। যা সংশ্লিষ্ট দফতর তদন্ত করলে উঠে আনবে বলে মনে করছেন নাম প্রকাশ না করা শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী তুষার পাল এই হাসপাতালে আছেন ২০১২ সাল থেকে। অফিস কাম কম্পিউটার সহকারী এস্তাফিজুর রহমান যোগদান করেছে ২০০৯ সালে। হিসাবরক্ষক প্রবীর কুমার পাল এই হাসপাতালে আছেন ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত।

জানা যায়, প্রবীর কর্মচারীদের মাধ্যমে কক্সবাজারের সদর হাসপাতালের গভর্নিংবড়ির সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের অধীনস্থ হয়ে নানান ধরনের অনিয়ম করে এসেছে যা তদন্ত করলে উঠে আসবে। সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল নিজে দাপট খাটিয়ে তার অধীনস্থ রুস্তম আলী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে খাবার কন্ট্রাকসহ হাসপাতালটির যাবতীয় কন্ট্রাক পেতে সহযোগিতা করতেন এবং সেখান থেকে একটি কমিশন নিতেন খোদ সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। শুধুু তাই নয়, হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায় এ আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলীকে দিয়ে করিয়ে মোটা অংকের টাকা পকেটে ভরতেন সংসদ কমল। এদিকে দেড় যুগের অধিক কর্মকর্তা কর্মচারী এই হাসপাতালে রাখার কারণ খুঁজতে গিয়ে বের হয়ে আসে  এসব নানান তথ্য।

অফিস কাম কম্পিউটার সহকারী এস্তাফিজুর রহমান জানান, আমি কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এই হাসপাতালে এসিেছ ২০০৯ সালে। এখন পর্যন্ত আছি।

এদিকে বিভিন্ন প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজার পৌরসভার আবুল হাসেম ছেলে আএনজিও মাধ্যমে এই হাসপাতালে চাকরি করলেও তার কথায় হাসপাতাল চলে এমন অবস্থায় আছে। সাগরের হাসপাতালে যাবতীয় কাজকর্ম ও বিভিন্ন দফতরের চাবিসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তার হাতে থাকার কারণে হাসপাতাল কর্মকর্তরা অনেকটা তার কাছে জিম্মি। তার পিতা আবুল হাসেমের নামে আবুল হাসেম এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করে সাগর ও তার পিতা আবুল হাসেম খাবারের কন্ট্রাক বিভিন্ন মাধ্যমে লুপে নেন। বিগত সরকার আমলে সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এখান থেকে বেশ ভাল রকমের একটি কমিশন পেত। সরকার পতনের পরেও সাইমুম সরওয়ার কমলের ঘনিষ্ঠজনদের এখনো  হাসপাতালের বিভিন্ন দফতরে কাজে লাগিয়ে এখনো কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। বিশেষ করে  হিসাব সহকারী প্রবীর কুমার পাল ও তুষার পাল তাদের এই হাসপাতালে প্রায় দেড় যুগের অধিক সময়ে শতকোটি টাকা হেরফের করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সুপার ডা. মং টিংঞো প্রায় দেড়যুগ থাকা কর্মকচারীদের বিষয়ে বলেন, কর্মচাীরদের এক র্কমস্থলে প্রয়োজনে বেশ কিছু সময় রাখা যায়। তবে যারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তারা ২-৩ বছরের অধিক থাকতে পারেন না। তাদের প্রয়োজন আছে বিধায় রাখা হয়েছে। তারপরেও তাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় উপপরিচালক ডা. কামরুল আযাদ জানান, এ ব্যাপারে আমি অবগত নই, যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে তবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেকে/এজে
আরও সংবাদ   বিষয়:  কক্সবাজার   সদর হাসপাতাল  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সাতকানিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল গ্রেফতার
কুবির ক্যাফেটেরিয়ায় পচা ও বাসি ইফতার বিক্রয়ের অভিযোগ
সোনাগাজীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ গ্রেফতার
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহসহ পদত্যাগের দাবিতে মিছিল
কাপাসিয়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বাজার মনিটরিং

সর্বাধিক পঠিত

লালপুরে ঈদগাহ নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাংচুর
ছেলের বায়না মেটাতে নতুন বাইক, এক সপ্তাহ পর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু
নালিতাবাড়ীতে অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে জরিমানা
শ্রীমঙ্গলে এখনও সয়াবিন তেল সংকট, বিপাকে ভোক্তা
কাপাসিয়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বাজার মনিটরিং

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝