পবিত্র রমজানে পচা ও বাসি ইফতার সামগ্রী বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার বিরুদ্ধে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে পোকাযুক্ত ও বাসি খাবার পরিবেশন করে সমালোচনায় ছিল এ কাফেটেরিয়া।
সোমবার (৩ মার্চ) বিকাল ৫ টায় আজহার ও শাহাআলম নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী কাফেটেরিয়া থেকে ছোলা বুট কিনে সেগুলো পচা ও বাসি খাবার ছিল বলে অভিযোগ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টরও এর সত্যতা খুঁজে পান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফতার করার উদ্দেশ্যে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী কাফেটেরিয়া থেকে ছোলা বুট ক্রয় করে নেন। পরবর্তীতে পচা ও বাসি হওয়ায় তারা সেগুলো ফেরত দিতে এসে কেনো এ ধরনের খাবার বিক্রি করা হয় তা ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক (মান্নু মজুমদারের অনুপস্থিতিতে) শরীফের কাছে জানতে চান। এরমধ্যে ক্যাফেটেরিয়ায় কর্মরত কর্মচারীরা একেকজন একেকরকম বক্তব্য দিতে থাকেন। এসময় তাদের পরস্পরের কথার মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও প্রতিনিয়তই ক্যাফেটেরিয়ার বিরুদ্ধে ভেজাল ও নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ রয়েছে শিক্ষর্থীদের। তাদের অভিযোগ, কয়েক দিনের রান্না পচা-বাসি কোন খাবারও ফেলে দেয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা সেখানে খাবার নিতে গেলে তাদের জন্য আলাদা করে ভালো খাবার রাখা হয়। অপরদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গেলে তাদের দেয়া হচ্ছে এসব পচা ও বাসি খাবার। এছাড়াও শনিবারে ট্যুরিস্টদের জন্য বিশেষভাবে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখলেও শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে কাফেটেরিয়া।
এবিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাআলম বলেন, ইফতারের জন্য আমরা ক্যাফেটেরিয়া থেকে ৬০ টাকার বুট কিনি। যেটা পঁচা ও বাসি ছিল। খাবারগুলো আজকের ছিলোনা। কিন্তু কর্মচারীরা সেটি মানতে নারাজ। শুক্রবার ও শনিবার শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ থাকলেও ট্যুরিস্টদের জন্য কাফেটেরিয়া খোলা থাকে। আমরা চাই এ ক্যাফেটেরিয়া যারা বর্তমান পরিচালনা করছে তাদের রদবদলের মাধ্যমে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। পাশাপাশি শিক্ষকরাও মনিটরিং করলে ভালো চলবে বলে মনে করি।
ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, গতকালের কিছু অবশিষ্ট বুট ছিল। বাসি খাবার কেন বিক্রি করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুটগুলো ভালো ছিল তাই প্যাকেট করা হয়েছিলো। খারাপ হলে আমরা বিত্রি করতাম না। তবে আজকেও ইফতারের পর বিশাল অংশ বুট অবশিষ্ট থেকে যায়। এ বুট কি আগামীকাল বিক্রি করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সরিয়ে নিয়ে বলেন এগুলা আর বিক্রি করা হবে না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়ে দেখতে আসেন ক্যাফেটারিয়ার পরিচালক কমিটির সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান। মো. দলিলুর রহমান বলেন, আমরা সরেজমিনে এসে খাবারটি বাসি পেয়েছি। অতিরিক্ত কিছু ছোলা বুট ছিল যা আগামীকাল ব্যবহার করতে পারে বলে আমরা এগুলাকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের পরিচালনা কমিটিতে যারা রয়েছি তাদেরকে নিয়ে আগামীকাল বসে সিদ্ধান্ত নিব। অতি দ্রুত টেন্ডারের মাধ্যমে ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্ব পরিবর্তন করা হবে।
কেকে/ এমএস