মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হাওয়া এক রোগী করছেন পাগলের মতো আচরণ। আশপাশের রোগীদের মারধর করে ভাঙচুর করছেন জিনিসপত্র। তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে অতিষ্ঠ হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স এবং রোগীরা।
খবর নিয়ে জানা যায়, সোমবার (০৩ মার্চ) দিবাগত রাত নয়টার দিকে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে ভবেরচর বাগান বাড়ি এলাকা থেকে শাহনাজ (২১) নামে এক রোগী আসেন গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ভর্তি রাখেন। এ সময় তার স্বামী আল আমিন তার সাথে ছিল।
এ দিকে মঙ্গলবার (০৪ মার্চ) সকালে আটটার দিকে তার স্বামী বাড়িতে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে শাহনাজ। আশেপাশের রোগীদের মারধর করে তাদের জিনিসপত্র ভাঙচুর করছেন। হাসপাতালের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে সে। কয়েক দফা হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স এসে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে আশেপাশের রোগীদের নিরাপত্তা স্বার্থে তাকে হাসপাতালে একপাশে জানলার সাথে বেঁধে রাখা হয়।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা রোগী আফিয়া বেগম বলেন, 'সকাল থেকে তার অস্বাভাবিক আচরণে আমরা অতিষ্ঠ। কখনো রোগীদের তেড়ে গিয়ে মারধর করছেন কখনো জিনিসপত্র ভেঙ্গে ফেলছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়ে আছে তার যন্ত্রণায় হাসপাতালে টেকা দায়'।
আরেক রোগী সালমা আক্তার বলেন, 'রোগীদের হাত থেকে ইনজেকশন দেওয়ার ক্যানোলা খুলে ফেলছেন। স্যালাইন টাঙ্গানোর স্ট্যান্ড, ব্যাগ, খাবার নিয়ে ফেলে দিচ্ছেন এক রোগী। পুরো মহিলা ওয়ার্ডের ভেতরে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি'।
বিষয়টা সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. দেবব্রত দাস বলেন, 'অবস্থা দেখে যেটা মনে হচ্ছে উনি সম্ভবত মানসিক কোন রোগে আক্রান্ত। এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয় বিশেষ পদ্ধতিতে সেই ব্যবস্থা আমাদের হাসপাতালে নেই। আমরা রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ' বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। একজন রোগীর জন্য যাতে অন্য রোগীদের সমস্যা না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে'।
কেকে/এআর