চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অবৈধ ইটভাটা পরিবেশ সচিব ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর জাস্টিস অব ডিমান্ড প্রদান। জাস্টিস অব ডিমান্ড প্রদান পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষায় ও জনস্বার্থে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও এর আশপাশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটা অপসারণে দেওয়া ডিমান্ড অব জাস্টিস নোটিশ প্রসঙ্গে তাগাদাপত্র দিয়েছে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)।
গত সোমবার (২৪ ফে্রুয়ারি) বিএইচআরএফ মহাসচিব অ্যাডভোকেট এ এম জিয়া আহসান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই তাগাদাপত্র দেন।
এতে উল্লেখ করা হয়, চন্দনাইশ ও এর আশপাশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলসহ চট্টগ্রামের অধিকাংশ ইটভাটার লাইসেন্স নেই। তবুও প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ইটভাটা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আবাদী জমির টপ সয়েল ছাড়াও এসব ইটভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে পাহাড়ি মাটি, ইট পোড়াতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে বনের গাছ। এর ফলে উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষ, পশু, পাখি, গাছপালা এবং জলাশয়গুলোর। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিভিন্ন ফসলের ফলনও দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, চন্দনাইশের পাহাড় ও সমতলে গড়ে ওঠা ৩১টি ইটভাটার ২৫টিই অবৈধ। গত ৪ মার্চ ২০২৩ তারিখে বিএইচআরএফের পক্ষে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চন্দনাইশের কাঞ্চনাবাদে গড়ে ওঠা ইটভাটা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ আঞ্চলিক, জাতীয় ও অনলাইন মিডিয়া এবং টিভিতে প্রকাশিত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহযোগিতায় ইটভাটায় অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে তৎকালীন স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলামের ভাগিনা জোয়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ রোকনের মেসার্স শাহ আলী রজা (র.) ব্রিকস (এসএবি) ম্যানুফ্যাকচারার্সকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে ওই বছরের ২২ মে অনুমোদনহীন ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনা অমান্য করায় আইনি নোটিশ দেয় বিএইচআরএফ। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, অভিযানে জরিমানার মাধ্যমে ইটভাটাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ মে এসএবি ইটভাটার চিমনি এস্কেভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন, যা সরে জমিনে বিভিন্ন আঞ্চলিক, জাতীয় ও অনলাইন মিডিয়া এবং টিভিতে প্রকাশিত হয়।
অভিযানের পর অবৈধ ইটভাটা ও পাহাড় কাটা কার্যক্রম কিছুদিন বন্ধ ছিলো। কিন্তু ৫ আগষ্ট পরবর্তী প্রশাসনের নানান পরিবর্তন ও শূন্যতার সুযোগে আমিন আহমদ বাহিনীর নেতৃতে চন্দনাইশের কাঞ্চননগর এর বিস্তৃর্ণ পাহাড়ে আবার পরিবেশ বিপন্ন করে অবৈধ ইটভাটার কাযক্রম চলছে। এর আগে চট্টগ্রামের পাহাড়, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অন্তবর্তী সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে বিবৃতি দেন ১০৫ জন মানবাধিকার আইনবিদ।
উল্লেখ্য বিগত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মহামান্য হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন পক্ষ থেকে পরিবেশ সচিব ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে চন্দনাইশ সহ সবখানে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়ার আদেশ মান্য করতে এই ডিমান্ড জাস্টিস প্রদান করেন।
কেকে/এআর