বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫,
২২ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
শিরোনাম: দালাল নির্মূলে ঢাকা মেডিকেলে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অর্ধশতাধিক আটক      ভারতের পরবর্তী লক্ষ্য পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া      যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যুদ্ধ ঘোষণা      রাজধানীর ভাষানটেক বিআরপি বস্তিতে আগুন      হাসিনাকে রাজনীতিতে ফেরানোর ক্ষমতা ভারতের নেই      অর্থ পাচারের মামলায় খালাস তারেক রহমান-মামুন      প্রজাতন্ত্রকে শাসন করছে প্রশাসনের ক্যাডাররা      
খোলাকাগজ স্পেশাল
প্রজাতন্ত্রকে শাসন করছে প্রশাসনের ক্যাডাররা
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫, ৯:৫৩ এএম  (ভিজিটর : ৬২)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের স্টাইলে দেশে এখনো চলছে দখল শাসন ও শোষণ। বিগত ১৫টি বছর দলীয় লেজুড়বৃত্তি করে বাড়তি সুবিধা নেওয়া ছিল আমলাদের রেওয়াজ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ পদ আঁকড়ে ধরার পাশাপাশি অন্য ক্যাডারের শীর্ষ পদেও হাত বাড়াতেন তারা।

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রেষণে বছরের পর বছর শীর্ষ পদ আগলে রাখা, জ্যেষ্ঠ সচিবসহ বড় পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লিয়েনে নিযুক্ত হওয়ার প্রথা থেকে এখনো বের হতে পারেননি। এমনকি জুলাই ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের এসময়েও দিব্যি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি ছড়ি ঘোরাচ্ছেন তারা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন দফতর যেমন সিটি করপোরেশন, হাসপাতাল, শিক্ষাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পেও সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের বাইরের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রেষণে নিয়োগ পান। এতে কর্মস্থলে কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। ফলে প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক কাজের গতি হারিয়ে ফেলে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসন ক্যাডারের দেড় হাজারের মতো পদ এখনো খালি। তবু অন্য ক্যাডারের ৮৩৩ পদে প্রশাসনের কর্মকর্তারাই প্রেষণে বসে আছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে রয়েছেন ২১ জন, আর লিয়েনে আছেন প্রশাসন ক্যাডারের ৬৫ কর্মকর্তা।

গ্রেডভিত্তিক বৈষম্য প্রকট : প্রশাসন ক্যাডারের সাত হাজার ৭৬ পদের মধ্যে প্রথম গ্রেডে কর্মরত ৯৬ জন। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩২ হাজার, শিক্ষা ক্যাডারের সাড়ে ১৫ হাজার ও কৃষি ক্যাডারের তিন হাজার ২০০ পদের একজনও প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা নেই। এসব ক্যাডারের কেউ কেউ চলতি বা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসা ৪১৯ জন (দ্বিতীয় গ্রেডপ্রাপ্ত) রয়েছেন। অথচ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারে কেউ দ্বিতীয় গ্রেডপ্রাপ্ত কর্মরত নেই। কৃষি ক্যাডারের মাত্র পাঁচজন রয়েছেন। যুগ্ম সচিব পদে (তৃতীয় গ্রেডপ্রাপ্ত) প্রশাসন ক্যাডারের ৮৪৮ জন রয়েছেন, সেখানে স্বাস্থ্যের ৬৫৭ জন থাকলেও শিক্ষায় কেউ নেই। শিক্ষা ক্যাডারের সাড়ে ১৫ হাজারের একজনও প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডপ্রাপ্ত কর্মরত কর্মকর্তা নেই। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো এত বড় মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পদে বসে আছেন সব প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। পুলিশ ক্যাডারের তিন হাজার ১০০ জনের মধ্যে প্রথম গ্রেডে মাত্র একজন রয়েছেন, দ্বিতীয় গ্রেডে ৮ জন আর তৃতীয় গ্রেডে রয়েছেন ১৩৫ জন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মুনীরা সুলতানা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলামের মতো কর্মকর্তারা কারিগরি বা গবেষণাধর্মী সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদে রয়েছেন। নিজ নিজ ক্যাডার ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দিলে এসব অফিসে কাজের গতি ও সেবার মান বাড়বে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তিন সদস্যের সবাই প্রশাসন ক্যাডারের। সরকারের এমন বহু দফতর রয়েছে, যেখানে নিজ নিজ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে শীর্ষ পদে বসালে সুফল মিলতে পারে।

সরকারের পদে ও পদোন্নতিতে বৈষম্য : উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের সরকারের পদগুলোতেও পদোন্নতিতে বৈষম্য রয়েছে। এসব পদে বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ৭৫ শতাংশ ও অন্য ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা ২৫ শতাংশ পদোন্নতি পাওয়ার কথা। তবে এ নিয়মও এখন মানা হয় না। ২৫ ক্যাডারের প্রায় ৫৩ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে উপসচিবের সংখ্যা মাত্র ২৩ শতাংশ। বর্তমানে সরকারের সচিব ও সিনিয়র সচিব মিলে ৭৮ জনের মধ্যে মাত্র আটজন অন্য ক্যাডার থেকে আসা। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ৫০ ভাগ প্রশাসন ক্যাডার এবং অন্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ ভাগ পদ পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, শুধু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরেই ৫১২টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে মহাপরিচালক, দু’জন অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং চারজন পরিচালক রয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের। শিক্ষা ক্যাডারের হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তার সেখানে পদায়ন রয়েছে। সমবায় অধিদফতরের প্রধানের পদ ‘নিবন্ধক ও মহাপরিচালক’ হিসেবে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সমবায় ক্যাডারের কেউ পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পাননি। সমবায় ক্যাডারের দু’জন কর্মকর্তা এর আগে এক মাস করে রুটিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে ১৯৬ জনের ক্যাডারটিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পদোন্নতিপ্রাপ্ত কেউ নেই। চতুর্থ গ্রেডে আছেন মাত্র পাঁচজন।

প্রশাসন ক্যাডারের পদ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ : আগে প্রশাসন ক্যাডারের তপশিলভুক্ত পদ ছিল তিন হাজার ৯৭টি। গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) গঠন ও ক্যাডার আদেশ, ২০২৪’ নামে একটি এসআরও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রশাসন ক্যাডারের জন্য পদ বাড়িয়ে সাত হাজার ৭৬টিতে উন্নীত করে। নতুন পরিপত্রের মাধ্যমে ১৯৮০ সালের ‘বিসিএস (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুল’ বাতিল করা হয়। এখন জনপ্রশাসনে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা আছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো। ফলে প্রায় দেড় হাজার পদ খালি দেখাচ্ছে। এসব পদে বসানোর মতো কর্মকর্তা প্রশাসন ক্যাডারের নেই। লোক না থাকলেও পদ বাড়ানো নেওয়ায় সেই সময় সমালোচনাও হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা যা বলছেন : জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই লোকটিকেই প্রেষণে নিতে হবে, যে আপনার থেকে সেরা। যিনি সাহসের সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন। একজন বিজ্ঞানী অনেক বড় গবেষক হতে পারেন, কিন্তু প্রশাসক হিসেবে ভালো নাও হতে পারেন। প্রশাসন ক্যাডার থেকে এসব পদে পদায়ন দেওয়া হয় কারণ, একজন যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিবের হাতে-কলমে অত্যন্ত উঁচুমানের দক্ষতা অর্জন করার কথা। এখন হয়তো করে না।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ স্থানীয় এক সংবাদ সংস্থাকে জানান, ‘আদালতের রায়ে উপসচিব থেকে ওপরের পদে ৭৫ শতাংশ আর অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা নেওয়ার কথা বলা আছে। তবে সেটা রায়ের মধ্যেই সীমাবব্ধ, মানা হয় না। আর সংস্কার কমিশন সেটি এখন ফিফটি ফিফটি করার কথা বলেছে। অন্য ক্যাডারের যারা, তাদের তো নিজেদের কাজের ক্ষেত্রগুলোতে একটা যোগ্যতা-দক্ষতা আছে, সেটি কাজে লাগানোর প্রয়োজন রয়েছে। 

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মতো যতগুলো কারিগরি বিষয় আছে, এসব জায়গায় নিশ্চয় অন্য ক্যাডারের যারা তারা সুযোগ পেতে পারে। বিআরটিএ, ‘বিআরটিসি বা বিএসটিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে যদি উপযুক্ত ক্যান্ডিডেট থাকে, তাহলে শীর্ষ পদে সেখানকার কর্মকর্তাকেই বসানো উচিত। অথবা বাংলাদেশ আর্মির ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের মেজর জেনারেল অথবা ইএমই কোরের একজন মেজর জেনারেল পদমর্যাদার কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন অফিসারকে বিআরটিএ, বিআরটিসি এর মতো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসালে সেটি বরং দেশের জন্য মঙ্গলজনক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, যে বাংলাদেশ পাসপোর্ট এর ডিজি, পল্লি বিদ্যুৎ এর  সাবেক ডিজি বাংলাদেশ আর্মির অত্যন্ত দক্ষ এবং চৌকষ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন উচ্চ পদমর্যাদার অফিসার ছিলেন এবং আছেন। তাদের দক্ষ নেতৃত্বের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নতি চোখে পড়ার মতো। বিআরটিএ ও বিআরটিসি এর মতো অত্যন্ত গতিশীল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানেও বাংলাদেশ সমরিক বাহিনী থেকে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া সময়ের দাবি।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

শিক্ষা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের সময় এসেছে: অধ্যাপক নাসির
ফুলবাড়ীতে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
আবরার ফাহাদ আগ্রাসন বিরোধী লড়াইয়ের একটি জার্নি: আসিফ মাহমুদ
মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার শয়ন গ্রেফতার
দুই ছিনতাইকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিল জনতা

সর্বাধিক পঠিত

‘তোমাদের সাথে হাশরের ময়দানে দেখা হবে’ স্ট্যাটাসে যুবকের আত্মহত্যা
নীলফামারীর সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকার গ্রেফতার
নালিতাবাড়ীতে জুয়ারির ও মাদককারবারিসহ গ্রেফতার ১১
মতলব উত্তরে ১৩ মামলার আসামি বেজী সুজন আটক
শ্রীমঙ্গলে ৯ বছর ধরে আটকে আছে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close