পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথায় পেঁয়াজের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে চাষিরা। নতুন পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হলেও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না তারা। পেঁয়াজ উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে পেঁয়াজের দাম কম। পুরো সিজনে পেঁয়াজের দাম আরো কমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে লোকসান গুনতে হবে পেঁয়াজ চাষিদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে চাষিরা পেঁয়াজের মূল্য ভালো পাওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি (১২ হাজার হেক্টর) জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। ২ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চাষি ওহিদ মোল্যা ও গট্টি ইউনিয়নের চাষি জসিম মোল্যা জানান, পেঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ ৭০ হাজার থেকে প্রায় ৮০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৭০/৮০ মণ ফলন হয়। আর বর্তমান বাজারে পেঁয়াজ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ১০৫০ টাকা। খরচের চেয়েও কম মূল্য পাচ্ছে কৃষকরা। প্রতি মণ পেঁয়াজের মূল্যে ২ হাজার টাকা হলে কৃষকরা কিছুটা লাভবান হতো। বর্তমানে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলার রায়হান শেখ নামে এক বর্গা চাষি বলেন, নিজস্ব জমিতে এ বছর প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে যদি ১১শ' থেকে ১২শ" টাকা খরচ হয়, তাহলে বর্গা চাষিদের দেড়গুণ খরচ হবে। তাতে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনের খরচ পড়বে ১৭শ' টাকা থেকে ১৮শ' টাকা। সর্বনিম্নে বাজারে ২ হাজার টাকা পেঁয়াজের দাম হলে চাষিরা দু-মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাঁচতে পারতো। পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চাষিরা।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস বলেন, এ বছর পেঁয়াজের বীজের দাম বেশি থাকায় এবং অধিক সেচের প্রয়োজন হওয়ার উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজস্ব জমিতে উৎপাদন ব্যয় মণপ্রতি ৯০০ টাকার কাছাকাছি এবং লিজ/বর্গা জমিতে ১৩০০ টাকার কাছাকাছি। মৌসুমের শুরুতে দাম কম থাকলেও আশা করা যায় পরবর্তীতে দাম বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট হতে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ ক্রয়ের উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশাবাদী।
কেকে/ এএস