কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ও স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তির ৪০ শতাংশ ফিসহ সকল ধরনের বর্ধিত ফি কমানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর যুক্ত করে উপাচার্য দফতরে এ স্মারক লিপি জমা দেওয়া হয়। এর আগে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত গণস্বাক্ষরের আয়োজন করে থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ১৭ অক্টোবর সেমিস্টার ও স্নাতকের ভর্তি ফিসহ আরো কিছু ফি বাড়ানো হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। তাদের জন্য অতিরিক্ত ফি বহন করা কষ্টসাধ্য। বার্ষিক আয় বাড়ানোর কথা বলে শিক্ষার্থীদের উপর আর্থিক ধকল বাড়ানো এটা অমানবিক। এক্ষেত্রে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য আমরা তাগিদ জানাই।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, শিক্ষার্থীদের প্রতি অমানবিক আচরণ থেকে আপনাদের বিরত থাকার অনুরোধ জানাই। শিক্ষার্থীদের জীবন পরিচালনা সহজীকরণের জন্য সেমিস্টার ও স্নাতকে ভর্তি ফি ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জানাই। এ ছাড়াও যে সকল খাতে ফি বর্ধিত করা হয়েছে সেগুলো কমানোর জন্য অনুরোধ জানায় তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে আয় দেখাতে বলা হয়েছে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আয়ের খাত হিসেবে ১৫টি খাত দেখানো হয়েছে, সে সাথে বর্ধিত করা হয়েছে বিভিন্ন খাতের ফি। এর মধ্যে স্নাতক প্রথম বর্ষে ফি ১ হাজার, ২য় বর্ষে ৫৫০ টাকা ফি বৃদ্ধি করা হয়।
অন্যদিকে স্নাতকোত্তরের (বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা ও আইন) অনুষদের ভর্তির ফি আগে সাত হাজার আটশো থাকলেও ২০২৩-২৪ সেশনে সেই ভর্তি ফি আট হাজার নয়শত টাকা করা হয়েছে। হল ফি বৃদ্ধি করে ১৫০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়াও স্নাতকের নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রেও বাড়ানো হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা।
থিয়েটারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গণিত বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। ২০১৮ সালে থিয়েটারের দাবির প্রেক্ষিতে স্নাতকোত্তর এ ভর্তি ফি কমানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন খাতে ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে আজকে আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করেছি প্রশাসন বরাবর। আমরা জেনেছি সেমিস্টার ফি এবং অনার্সে ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন ধরনের ফি বর্ধিতকরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের উচিত ছিল আগে যা ফি ছিল তা থেকে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় আরো ফি কমানো তা না করে ফি বাড়ানোর আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বার্ষিক আয় বাড়ানোর নাম করে শিক্ষার্থীদের উপর বিপুল অর্থের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কোনোভাবে কাম্য নয়।
কেকে/এএম