“ভোক্তা ন্যায্য মূল্যে খাবে, উৎপাদকও ন্যায্য মূল্য পাবে” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ভোক্তা ও উৎপাদকের মেলবন্ধনে ঠাকুরগাঁওয়ে নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে ‘কৃষকের বাজার’ এর নতুন কার্যক্রম। জুলাই আন্দোলনের পর থেকে চলমান কৃষকের বাজারে নতুনত্ব এনেছে ন্যায্য মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রয় কার্যক্রম।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টায় ঠাকুরগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের যৌথ পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) ঠাকুরগাঁও জেলার খামারিদের উদ্যোগে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ইজহার আহমেদ খান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান, ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মাসুম উদ-দৌলাসহ আরো অনেকে।
শুক্রবার ও শনিবার দুইদিন করে চলা কৃষকের বাজার রমজান উপলক্ষে চলছে প্রতিদিনই। এ বাজারের মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে ন্যায্য মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রয় কার্যক্রম। যেখানে ডিম ও মুরগি অন্যান্য বাজারের তুলনায় অনেকটাই কম মূল্যে পাওয়া যাবে।
এ ছাড়াও এ বাজারে নিজেদের ক্ষেতের উৎপাদিত কাচা সবজির পশরা নিয়ে বসেছেন কৃষকরা। তাতে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বাজারের চেয়ে প্রতিটি পণ্যে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে পেয়ে খুশি ক্রেতারা। শুধু কাচা সবজিই নয়, এ বাজারে পাওয়া যায় পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মশলা জাতীয় দ্রব্য এবং মাছ মাংশসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যই।
বাজার করতে আসা ক্রেতা নুর আলম জানান, আমাদের এখানে আশপাশে প্রায় ৩টি বাজার রয়েছে। আমি সবগুলোতেই যাই এবং সবগুলোরই মূল্য তালিকা আমার জানা। এখানে আমি কিছু সবজি ও প্রয়োজনীয় আরো দু-একটি জিনিস কিনেছি। এ বাজারে আমি স্থানীয় অন্য বাজারগুলোর তুলনায় প্রতিটি জিনিস অনেক কমেই কিনেছি। কোনোটাতে তো ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কম পেয়েছি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে প্রায় ৫০-৬০ টাকা কমে মুরগি, আর ৩০-৪০ টাকা কমে এক কেরেট ডিম কিনতে পেরে। এ কার্যক্রম রমজানের পরও চলমান থাকলে আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষ সন্তানদের নিয়ে খেয়ে বাঁচতে পারব।
ব্যবসা শুধু আয়ের উৎস নয়, এটাও এক ধরনের ইবাদত উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এর পরিধি আরো বাড়ানো হবে।
তবে রমজান পরবর্তীতে নিয়মিত হোক। এ বাজার এবং সরবারহের যেন ঘাটতি না হয় এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
কেকে/এএম