রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৮টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড়ো হয়ে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন।
বিক্ষোভ মিছিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা 'ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যু, মৃত্যু', 'আমার বোন ধর্ষিতা কেন? ইন্টারিম জবাব চাই', 'ধর্ষকের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে', 'আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাই নাই', 'ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই', 'লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে', 'বিচার, বিচার, বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই', 'ধর্ষিতার কান্না আর না, আর না', 'ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না' বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে ধর্ষণ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে প্যারিস রোড হয়ে পশ্চিম পাড়া ছাত্রীদের হলের অভিমুখে যাত্রা করেন তাঁরা। বিক্ষোভে প্রত্যেক হলের নারী শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে অংশ নেন। পরে বিক্ষোভটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এসে মিলিত হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।
হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, রিকশায় উঠলে রিকশাওয়ালা আমাদের দিকে উল্টা পাল্টা কথা বলে। আমরা যদি নিজের ক্যাম্পাসে নিরাপদ না থাকি তাহলে রাস্তায় কিভাবে নিরাপদ থাকবো সেই প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। একটার পর একটা ধর্ষণের ঘটনা দেশে ঘটে চলেছে। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের তরু থেকে আছিয়া ধর্ষণ। আমরা কোনোটারই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে পেয়েছি? এই ব্যর্থতা বাংলাদেশ সরকার তথা ইন্টারিম গভর্নমেন্টের। আমি আইন উপদেষ্টা তথা ইন্টারিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা ধর্ষকের শাস্তি পূর্ণাঙ্গভাবে করতে না পারেন তাহলে ধর্ষককে জনগণের কাছে ছেড়ে দেন। আমার মায়েরা-বোনেরা ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিরা নিসা বলেন, আজকের বাংলাদেশে নারীর ঠিক কতটা অরক্ষিত যেখানে ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ করা হয়। এবং ধর্ষকের কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না। শিশুটি তার বোনের বাসায় গিয়েও পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা পায় না। আজ আমরা নারীরা বাংলাদেশের কোথাও নিরাপদ না। বাস, রিকশা যেখানেই উঠি আমরা টিজিংয়ের শিকার হই।
রাবি স্টুডেন্টস্ রাইটস্ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষনের মতো ঘটনা ঘটছে। যার হাত থেকে ছোটবোন আছিয়াও রেহাই পায় নি। বর্তমান সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি নারী শিক্ষার্থী, বোন সর্বপরী জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন তাহলে এই দেশ চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন। ধর্ষকের সর্বচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড। এই মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে ধর্ষকদের বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করুন।
কেকে/এআর