পাকিস্তানের
প্রত্যন্ত অঞ্চলে সপ্তাহের ব্যবধানে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি ও অপ্রত্যাশিত
তুষারপাতে অন্তত ৩৫ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। দেশটির দুই প্রদেশ
খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে এ ঘটনা ঘটেছে।
দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি
জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২২ জনই শিশু। হতাহতদের বেশিরভাগই ভারী বর্ষণ এবং
তুষারপাতের কারণে হওয়া ভূমিধসে বাড়িঘর চাপা পড়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে দুই
প্রদেশে অন্তত ১৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ৫০০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাকিস্তানের
উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। শত শত ঘরবাড়ি
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেক সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাইবার
পাখতুনখোয়া, বেলুচিস্তানের অনেক দুর্গম অঞ্চলে সড়ক ও মোবাইল যোগাযোগ
নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই।
মার্চ
মাসের এই অপ্রত্যাশিত তুষারপাতে বিষ্মিত আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরাও। কারণ
দেশটিতে এ সময়ে গরম পড়তে শুরু করে। কিন্তু এবার তার ঠিক বিপরীত চিত্রের
জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন দেশটির আবহাওয়া অধিদফতরের সাবেক
পরিচালক মুশতাক আলি শাহ। তিনি বলেন, এ সময়ে কয়েক মিনিটের জন্য হাল্কা
শিলাবৃষ্টি অস্বাভাবিক নয়। তবে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে শিলাবৃষ্টি হওয়া
সত্যিই উদ্বেগের বিষয়।
উত্তর-পশ্চিমের
রাজ্য খাইবার পাখতুনখোয়ার কির্ক জেলার বাসিন্দা হাজিত শাহ বলেন, আমার
যতদূর মনে আছে, ২৫-৩০ বছর আগে আমি একবার হাল্কা তুষারপাত হতে দেখেছিলাম। সে
সময় আমার বয়স ছিল ১০ বছর। তবে সেবার তুষারপাত হয়েছিল শীতকালে এবং তার
পরিমাণ ছিল এবারের তুলনায় অনেক কম।
খাইবার
পাখতুনখোয়া প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় ত্রাণ বিতরণ
করছে এবং হতাহতদের পরিবারের জন্য নগদ সহায়তা ঘোষণা করেছে। চলতি সপ্তাহজুড়েই
সারাদেশে মূলত ‘ঠান্ডা এবং শুষ্ক’ আবহাওয়া বিরাজ করবে বলে পূর্বাভাস
দিয়েছে পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদফতর।