বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘কচুর খোঁজে, বিশ্বের সন্ধানে’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এই সেমিনারে কচুর উৎপত্তি, বৈশ্বিক বিস্তার, অভিযোজন ও জেনেটিক বৈচিত্র্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রাশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী। মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের জাতীয় জাতিতত্ত্ব জাদুঘরের উষ্ণমণ্ডলীয় ফসল গবেষক অধ্যাপক পিটার জে ম্যাথিউস এবং আয়োজক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ অনুষদের অর্ধ শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অধ্যাপক ম্যাথিউস তার উপস্থাপনায় কচুর জেনেটিক বৈচিত্র্য, পুষ্টিগুণ এবং বিভিন্ন জলবায়ুতে এর অভিযোজন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন।
তিনি বলেন, ‘কচু শুধু একটি ফসল নয়, এটি ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদ পদ্ধতির সাথে ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার সেতুবন্ধন স্থাপন করতে পারে। এতে টেকসই কৃষির সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
তার উপস্থাপনায় বিভিন্ন দেশের কচু চাষের সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হয়, যা পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে কৃষকদের উচ্চ ফলনশীলতার পথে সহায়ক হতে পারে।
অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘কচু একটি মূল্যবান খাদ্যশস্য, যা খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর পুষ্টিগুণ এবং বহুমুখী ব্যবহারের ওপর আরও গবেষণা ও উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হতে পারে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও একাডেমিক বিনিময় এই ক্ষেত্রকে আরও উন্নত করতে পারে।’
তরুণ গবেষকদের উদ্দেশে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন বলেন, ‘কচুর আধুনিক প্রজনন প্রযুক্তি এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে আমরা খাদ্য নিরাপত্তায় আরও একধাপ এগিয়ে যেতে পারি।’ তিনি তরুণদের উদ্ভাবনী মনোভাবের প্রশংসা করে উল্লেখ করেন যে, ভবিষ্যতে এই ফসলের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধিতে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আয়োজক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন সেমিনারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় কচু একটি সম্ভাবনাময় ফসল। এই সেমিনার তরুণ গবেষকদের কচু নিয়ে আরো গবেষণা ও উদ্ভাবনী পদ্ধতি বিকাশে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার আশা।’
কেকে/এজে