দেশে চলমান লাগামহীন ধর্ষণ এবং নারী দিবসে মো. মুহিম ওরফে মোহনা নামক এক রূপান্তরকামীকে ‘অদম্য নারী’ পুরস্কৃত করে নারী অবমাননার প্রতিবাদে দেশের ১৫১ জন বিশিষ্ট আলেম প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন।
সোমবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানান তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “আমাদের সমাজে যে নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখেছি আয়না ঘরে রোজার মধ্যে পর্দানশীন মুসলিম নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ধর্ষণের শিকার ১৬ বছরের কিশোরী বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। মাগুরাতে একটি নির্দোষ ৮ বছরের শিশু নির্মমভাবে ধর্ষণের শিকার হয়ে এখন লাইফ সাপোর্টে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এগুলো শুধু একটি অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের এক ভয়াবহ চিত্র।”
“ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্ষণ একটি জঘন্যতম অপরাধ, যা কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজের শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য। এই ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। আলেম সমাজের পক্ষ থেকে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমরা জোরালোভাবে আহ্বান জানাইঃ ধর্ষকের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস না পায়। একই সাথে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর ও জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।'”
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, শুধু শাস্তি ধর্ষণ প্রতিরোধে যথেষ্ট না। শাস্তির পাশাপাশি পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের জায়গাকে সমুন্নত রাখতে হবে। দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করছি যে, সুকৌশলে আমাদের সমাজে পশ্চিমা অপসংস্কৃতির বিস্তার ঘটানো হচ্ছে, যা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মো. মুহিম ওরফে মোহনা নামক এক রূপান্তরকামী ব্যক্তিকে ‘অদম্য নারী’ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এই ঘটনা শুধু নারীদের প্রকৃত মর্যাদাকে হেয়প্রতিপন্ন করেনি, বরং আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপহাস করেছে। একজন জন্মগত পুরুষকে নারীর স্বীকৃতি দেওয়া এবং নারীদের জন্য নির্ধারিত পুরস্কার প্রদান করা নারীত্বের প্রতি চরম অবমাননাকর। এটিকে আমাদের ইসলামী মূল্যবোধ ও পারিবারিক কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত হিসাবে বিবেচনা করছি। বিকৃত যৌন মতাদর্শের নরমালাইজেশনের প্রচেষ্টা বিদ্যমান অবক্ষয়কে আরো প্রকট করবে। আমরা ১৫১ আলেমের পক্ষ থেকে ধর্ষণ ও অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত অবস্থান প্রকাশ করছি।”
বিবৃতি দেওয়া আলেমরা হলেন-
আল্লামা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, শায়খ আহমাদুল্লাহ, প্রফেসর ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মুফতী মুহা. কাজী ইব্রাহীম, ড. মিজানুর রহমান আল আজহারী, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরি, ড. খলীলুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, ড. গিয়াসউদ্দীন তালুকদার, মাওলানা খুবাইব বিন তায়্যিব (জিরি), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ড. মানজুরে এলাহি, ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ড. মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী, ড. মীর মনজুর মাহমুদ, প্রফেসর ড. সায়্যেদ মাকসুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, হাফেজ হাবিবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী, শায়খ হারুন আজিজী নদভী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক কুয়াকাটা, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন সাদী (সাইমুম সাদী) ড. ইউসুফ সুলতান, শায়েখ মুরতাজা হাসান ফয়জী মাসুম, ড. মো. রফিকুল ইসলাম আল মাদানী, ড. রশিদ আহমদ, মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমাদ, মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল্লাহ আল-আমিন, মুফতি আমির হামজা, শায়খ কামরুল ইসলাম সাইদ আল আনসারী, শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক, মুফতি মনোয়ার হোসেন, শায়খ আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মুফতি আরিফ বিন হাবিব, সৈয়দ হাসান আল আযহারী, মাওলানা রাফী বিন মুনির, শায়খ জামাল উদ্দীন, মাওলানা আবদুল মজিদ, মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, শায়খ সাদিকুর রহমান আল-আযহারী, মুফতী মুহাম্মদ আলী, মুফতী আব্দুল্লাহ মাসুম, মাওলানা মীযান হারুন, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী, মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক কাসেমী, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, সৈয়দ শামছুল হুদা, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী, ড. আবুল কালাম আজাদ মাদানী, ড. বি এম মফিজুর রহমান আল আজহারী, মুফতী শামছুদ্দোহা আশরাফী, মুফতি নোমান কাসেমী, শায়খ মোল্লা নাজিমুদ্দীন, মুফতি জিয়াউর রহমান, উস্তায আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান, মুফতি হেদায়েত উল্লাহ খান আজাদি, মাওলানা গাজি ইয়াকুব, মুফতী সাঈদ আহমাদ, মুফতি নুরুজ্জামান নাহিদ, মাওলানা আফীফ ফুরকান, মুহাদ্দিস মাওলানা আ.ন.ম. আকরাম হোসাইন, মাওলানা সিফাত হাসান, মাওলানা মুহিউদ্দীন কাসেমী, মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসউদ, মুফতি আরিফ জাব্বার কাসেমী, মুফতি আবদুল গাফফার, মাওলানা নিজাম বিন মুহিব, মুহাম্মাদ নূরুল্লাহ, মাওলানা যুবায়ের আহমাদ, মাওলানা মুস্তাফিজ রহমানী, মুফতী আমজাদ হোসাইন আশরাফী, মাওলানা আমিন ইকবাল, মাওলানা ইমরান রাইহান, মাওলানা জহির উদ্দিন বাবর, মাওলানা নাজমুল হাসান, শায়খ ইউসুফ ওবায়দী, উস্তাদ আহমদ রফিক, মাওলানা হাছিব আর রহমান, শেখ ফজলুল করীম মারুফ, মাওলানা এম হাসিবুর রহমান, মাওলানা আসআদ বিন সিরাজ, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা ইয়াহইয়া তাকী, মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার, হাফেজ মাওলানা মুফতী আবু মুহাম্মদ রহমানী, মাওলানা আব্দুল কাহহার, শায়খ ড. আব্দুস সালাম আজাদী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, মাওলানা বদরুজ্জামান, মাওলানা মুফতী আফিফ ফুরকান, মুফতী ড. খলীলুর রহমান, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি মুহাম্মাদ হেদায়েতুল্লাহ, মাওলানা মাকসুদ আল-আজমী, মাওলানা নাজমুল ইসলাম, মুফতি আম্মার বিন নূর, মাওলানা মির্জা আরাফাত, শাইখ সালাহউদ্দীন মাক্কী, মাওলানা উমায়ের বিন রশিদ, মাওলানা আবদুস সালাম যুক্তিবাদী, মাওলানা এমদাদ হোসেন, মাওলানা নুরুল কারীম আকরাম, মাওলানা গোলাম রব্বানী, মাওলানা মুস্তাফা, শায়খ জারির ইবনে আব্দুল্লাহ জাফরী, মুফতী নুরুন্নবী, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মুফতী তানভীর আহমদ, মুফতী আল আমিন, মুফতী সুলাইমান খান, মুফতী সালমান শেখ, হাফেজ মাওলানা হাসানুজ্জামান, মাওলানা নজির হোসাইন, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মুফতী আব্দুল্লাহ, মুফতী রফিকুল ইসলাম, মুফতী আবুল হাসান, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মুফতী ফাহিম আহমাদ, মাওলানা হাসান বনিক, মুফতী যোবায়ের হাসান, মাওলানা আল আমিন রংপুরী, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন, মুফতী মুহাম্মদ আলী যশোরী, মুফতী শরীফুল ইসলাম, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, হাফেজ জাহিদ হাসান, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা সাব্বির আহমদ, মুফতী দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দুর রহমান কোব্বাদি, মুফতি মোহাম্মাদউল্লাহ, মুফতি ইমামুদ্দিন, মুফতি মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমি, মুফতি জুবায়েব আবদুল্লাহ কাসেমি ও মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবি।
কেকে/এজে