ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাহে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর ইব্রাহীমপুরে মনিপুর স্কুল মিলনায়তনে কাফরুল থানা দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রমযান মাস শ্রেষ্ঠ মাস। এজন্যই শ্রেষ্ঠ যে, এ মাস আল্লাহর তায়ালার হিসাবে গ্রহণে শ্রেষ্ঠ মাস। আর এ মোবারক মাসে মহান আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেছেন, যা বিশ্ব মানবতার মুক্তির মহাসনদ। তাই এ মাসের বরকতকে কাজে লাগিয়ে সকলকে আত্মগঠন ও তাক্বওয়া অর্জনে ব্রতী হতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বনবী (সা.) পবিত্র মাহে রমজানের জন্য অপেক্ষায় থাকতেন। তিনি রজব মাসের প্রথম তারিখ হতেই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে এভাবে দোয়া করতেন যে, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাদের রজব ও শাবান মাসের পূর্ণ বরকতা দান করো এবং মাহে রমযান পর্যন্ত হায়াত দান করো। তিনি এজন্য এ মাস প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা করতেন যে, এ মোবারক মাস আল্লাহর কাছে হিসেবে গ্রহণের শ্রেষ্ঠ মাস। এ মাসেই বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারি আল কুরআন নাজিল হয়েছিল বলেই এ মাস মহাসম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। আর কুরআন নাজিলের জন্যই রমজান মাসও মহিমান্বিত। এ মাসেই বদর যুদ্ধ ও মক্কা বিজয়সহ ইসলামের বড় বড় বিজয় এসেছিল। তাই অন্য মাসের তুলনায় এ মাসের মরতবা ও মর্যাদা সমধিক। তিনি পবিত্র মাহে রমযানে সিয়াম ও কিয়াস পালনের মাধ্যমে তাক্বওয়া ও তাজকিয়া অর্জনে সকলকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, রমজান মাসের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কালামে হাকিমে বলা হয়েছে, রমজান মাস এমন একটি মাস যে মাসে আল কোরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। আর রমজান মাস এমন একটি মাস যে মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং উন্মুক্ত করা হয় জান্নাতের দরজাগুলো। হাদিসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো। অন্যত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে রমজান মাসে রোজা রাখবে, আল্লাহ তায়ালা তার অতীতের সকল গোনাহ মাফ করে দেবেন। তাই মাহে রমযানে আমাদের উদাসীন থাকার সুযোগ নেই বরং রমজানের মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। প্রতিদান স্বরূপ আল্লাহ আমাদের জান্নাতের নিয়ামত দান করবেন। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা ও সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য লস্কর মুহাম্মদ তাসলিম, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, জসিম উদ্দিন, নাজমুল হাসান খান প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, রমজান গোনাহ মাফের মাস; তাক্বওয়া অর্জনের মাস। এ মাসের শিক্ষাকে বাস্তবজীবনে কাজে লাগিয়ে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে।
তিনি রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
কেকে/এএম