হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় খুন হয়েছেন। তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হলে প্রতিবেশীরা তাকে উত্তরার লেক ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
সোমবার (১০ মার্চ) ভোরে উত্তরার উত্তরখান পুরান পাড়ার একটি বাসার চতুর্থতলার ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. নাসিম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিবেশী ও বাড়ির মালিকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে বাসায় মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া খুন হয়েছেন, সেখানে তিনি নিয়মিত থাকতেন না। মাঝে মধ্যে আসতেন। তিন দিন আগে বাসাটিতে আসেন ওই শিক্ষক। এদিন এক মহিলা ও যুবক আসেন বাসায়। এদের ভাবি ও ভাতিজা পরিচয় দেন মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। পরে সোমবার ভোরে ওই দুইজন সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে ফ্ল্যাটের মূল দরজা বন্ধ করে চলে যায়। পরে সাইফুর রহমান বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হন। এরপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এসি মো. নাসিম আরো বলেন, সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই ভবনের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আসামি গ্রেফতারে কাজ করছে একাধিক টিম।
জানা গেছে, সাইফুর রহমান ভূঁইয়া পরিবার নিয়ে শান্তিনগর এলাকায় থাকতেন। তবে কিছুদিন আগে তিনি উত্তরার উত্তরখান থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় মাঝে মাঝে থাকতেন। সেই বাসায় একাই ছিলেন বলেও জানান তার স্বজনরা।
হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী রেজাউল রায়হান বলেন, সাইফুর রহমান স্যারকে কে বা কারা সোমবার ভোররাতে (সেহরির সময়) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে হত্যা করেছে। তার গলায় ও মাথায় কোপের দাগ রয়েছে।
রেজাউল রায়হান আরো বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে সবাইকে পদত্যাগ করিয়ে নতুন করে শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। সেখানে সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ করা হয়েছিল। তিনি (সাইফুর) এক সময় বিএনপির মতাদর্শী থাকলেও আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন সেমিনারে যাওয়ার কিছু ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন করেন। এ নিয়ে ওই কলেজে শিক্ষকদের মধ্যে কোন্দলও ছিল বলে জানা গেছে।
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
কেকে/এজে