কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাটবাজারে আগাম ওঠেছে গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল তরমুজ।
তরমুজের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। হাঁকডাক বাড়ছে তরমুজ বেচাকেনায়। ফলের দোকানগুলোতে তরমুজ প্রচুর পরিমাণে দেখা গেলেও চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। দাম চড়া থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে এই ফল। তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সাধারণ ক্রেতারা। প্রশাসন যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে তাহলে তরমুজ সহ বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে মনে করছেন ক্রেতারা।
সরেজমিনে কাম্পানীগঞ্জবাজার ও মুরাদনগর উপজেলা সদর বাজার গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা সারি সারি করে তরমুজ সাজিয়ে রেখেছে। ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দামের তরমুজ রয়েছে ব্যবসায়ীদের নিকট। ক্রেতারা কেউ কেউ দাঁড়িয়ে দেখছেন। কেউ আবার তরমুজ দামাদামি করছেন। দাম মনমতো হলে কেউ কিনে নিচ্ছেন, আবার কেউ অতিরিক্ত দাম মনে করে না কিনেই ব্যর্থ মনোরথে চলে যাচ্ছেন দাম কমার অপেক্ষায়।
তরমুজ কিনতে আসা চাকুরিজীবী আল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাজারে আগাম তরমুজের আমদানি থাকলেও দাম অনেক বেশি। যে তরমুজ ৮০-১০০ টাকায় কেনা যেত সে তরমুজ কিনতে হয় ২০০-২৫০ টাকায়। আর একটু বড় হলে তরমুজের দাম ৪০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত। রোজায় তরমুজ খাওয়ার ইচ্ছে হলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে কম আয়ের লোকজন অনেকেই তরমুজ কিনতে পারছেন না। বাজার মূল্য সহনীয় রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
আরেক ক্রেতা সোহাগ মিয়া ছোট মেয়ের আবদারে বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছেন। তরমুজের দাম দেখে অনেকটাই হতাশ। তারপরও মেয়ের আবদারে ২০০ টাকা দিয়ে ছোট একটি তরমুজ কিনে নিলেন। ছোট তরমুজ কেনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বড় তরমুজের দাম অনেক বেশি। ইচ্ছে থাকলেও কেনা সম্ভব নয়। তাই মেয়ের আবদার মেটাতে ছোট একটি তরমুজ কিনে নিলাম।
রিকশাচালক বাদল মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, চোখের সামনে নতুন ফল দেখে ছেলেমেয়েদের জন্য কিনতে ইচ্ছা হলেও দাম বেশি, তাই কিনতে পারছি না। যখন দাম কমবে, তখন কিনব। ছোট একটি তরমুজ কিনতে চাইলেও আড়াইশো থেকে তিনশ টাকা লাগবে। সারাদিনে যা আয় হয়, তা দিয়ে চাল-ডাল কিনব নাকি তরমুজ কিনে খাব।
তরমুজের দাম এত বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তরমুজ বিক্রেতা বাবুল মিয়া জানান, এপ্রিল মে মাসে তরমুজের ভরপুর মৌসুম। বাজারে এখন যেসব তরমুজ উঠেছে সেগুলো আগাম জাতের তরমুজ। সে কারণে আড়তে তরমুজের দাম একটু বেশি। তারপর আবার রমজান মাস চলছে। তাই তরমুজের চাহিদাও বেড়ে গেছে। রোজার পর হয়তো তরমুজের এ দাম থাকবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, রমজানের শুরু থেকেই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপন করা হবে।
কেকে/এএম