গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আল আমিন মিয়া নামে এক কৃষক সেচ মোটরের লাইসেন্স পেলেও দীর্ঘ দুই বছর ধরে বিদ্যুৎ সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও কোনো সমাধান পাননি তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, বৈধ লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও উপজেলা সেচ কমিটি তাকে সংযোগ না দিয়ে উলটো ৬০ ফুটের মধ্যে আরেকটি সেচপাম্পের অনুমোদন দিয়েছে এবং দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের পাঁয়তারা করছে। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচারের আশায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আল আমিন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
সরেজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ মৌজার বাসিন্দা মৃত শামসুল হকের ছেলে আল আমিন মিয়া ২০২২ সালের ৩ মার্চ একটি অগভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য উপজেলা সেচ কমিটির কাছে আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে তাকে লাইসেন্স নম্বর ১৬৭৫ (বই নম্বর ৯) প্রদান করা হয়। পরে তিনি রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সুন্দরগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেন। নিয়ম অনুযায়ী লাইন স্থাপন ও মিটার সংযোগ দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি।
কৃষক আল আমিন অভিযোগ করেছেন, তার বৈধ লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও উপজেলা সেচ কমিটি একই স্থানে মাত্র ৬০ ফুটের মধ্যে আব্দুস সালাম নামে আরেক ব্যক্তিকে লাইসেন্স দিয়েছে। আব্দুস সালামের লাইসেন্স আবেদন নম্বর ৮৫, সিরিয়াল নম্বর ৮৯২, বহি নম্বর ১০। তাকে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও আল আমিন দুই বছরেও সংযোগ পাননি। বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন, যা বর্তমানে চলমান।
আল আমিন মিয়া বলেন, সেচ লাইসেন্স পাওয়ার পরও দুই বছর ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না। অথচ একই জায়গায় অন্য একজনকে অবৈধভাবে লাইসেন্স দিয়ে সংযোগের চেষ্টা চলছে। এতে আমি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। দ্রুত তদন্ত করে সুবিচার চাই।
সেচ লাইসেন্স ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে কৃষকরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কৃষকদের দাবি, প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হবে, যা ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সুন্দরগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএম আব্দুল বারী বলেন, সেচ কমিটি যাচাই-বাছাই করে লাইসেন্স দেয়, এরপর আমাদের কাছে আবেদন করলে নিয়ম মেনে সংযোগ দেওয়া হয়। তবে নলকূপ অনুমোদনে আমাদের ভূমিকা নেই।
গাইবান্ধা জেলা বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। তবে যদি আল আমিনের সঙ্গে অন্যায় হয়ে থাকে এবং তিনি অভিযোগ করেন, তাহলে আবারও তদন্ত করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কেকে/এএম