বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫,
২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
শিরোনাম: সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল আরো দুই মাস      ‘পুরো বাংলাদেশ বোন আছিয়ার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, লজ্জিত’      সিগারেট করকাঠামোয় সংস্কার করতে হবে      মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি মারা গেছে      সচিবালয়, শাহবাগ ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ      ২য় শ্রেণির মর্যাদা পাবেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা      মাহমুদউল্লাহর অবসর নিয়ে সাকিব-মাশরাফির আবেগঘন পোস্ট      
গ্রামবাংলা
সন্তানের প্রতি যত্নশীল হোন
আপনার অজান্তেই সন্তান জড়াচ্ছে মরণ ফাঁদে
আব্দুল্লাহ আল মামুন রনী, বোয়ালমারী (ফরিদপুর)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ১:২৫ পিএম  (ভিজিটর : ৭৯)
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে শিশু-কিশোররা সময় কাটাচ্ছে অফলাইন/অনলাইন ভিডিও গেমস খেলে।তাদের দিনের বেশিরভাগ সময় কাটছে মোবাইল ফোনে। প্রথমে বিনোদনের জন্য বা অবসর সময় কাটাতে শিশু এবং কিশোররা ভিডিও গেমস খেলা শুরু করে। ভিডিও গেমস আমাদের সমাজের একটি ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিশু অফলাইন গেমস খেলে দিয়ে শুরুর পরে ক্রমেই অনলাইন এবং শেষে অর্থ দিয়ে গেম খেলে। অনলাইন জুয়া এখন চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।

আমাদের সমাজে অধিকাংশ বাবা-মা কর্মজীবী। তাদের বাচ্চাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছেনা। ফলশ্রুতিতে বাচ্চারা সারাদিন একা একা থাকে এবং বাইরে তেমন যাওয়া হয় না। সন্তান বাইরে গিয়ে বিপথে চলে যাবে কিংবা কোন বিপদ হবে, এমন ধারণা করে বাবা-মা তাদের বাইরে যাওয়া নিষেধ করে দেন। এর ফলে সন্তান বঞ্চিত হয় খেলাধুলা থেকে এবং আসক্ত হয়ে পড়ে ভিডিও গেমসে। অফলাইন গেমস থেকে অনলাইন গেমস এবং শেষে জুয়ায় আসক্ত হয়। বিভিন্ন ভিডিও গেমস এর ক্রমান্বয়ে প্রবেশের ধাপ নিম্নরুপ-

বাবুল শুটার বা টেম্পল রান: এই গেমসটি সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছর বয়সী শিশুরা খেলে। গেমসটি অফলাইন গেমস এটি মূলত কয়েন সংগ্রহ করা এবং এই গেমস এর কোন শেষ নেই।

মিনি মিলি্শিয়া বা মিনি মিলেটারি: এটি মূলত ফায়ার গেমস। গেমসটি একা একা খেলা যায় এবং হটস্পট অন করে আশেপাশে উপস্থিত থাকা বন্ধুদের সাথেও খেলা যায়। এটি মূলত ৮-৯ বছর বয়সী শিশু বা কিশোররা খেলে। এটি অনলাইন এবং অফলাইন এর মাঝামাঝি পর্যায়ের গেমস।

ফ্রী ফায়ার/পাবজি/কল অফ ডিউটি: মিনি মিলিশিয়া বা মিনি মিলেটারি খেলার পর শিশু বা কিশোররা ফায়ার গেমস এর প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। তারপর তারা একটু আপডেট ভার্সনের প্রতি আগ্রহী হয়। ফ্রী ফায়ার ২০১৭ সালে লঞ্চ হয়। এরপর ২০২০ সালে করোনা আসার পরে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। করোনার সময় বাবা-মা বাইরে খবরা খবর জানার উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোন কিনে এবং এই মোবাইল ফোন বাচ্চাদের দেওয়া হয় গেমস খেলার জন্য। উল্লেখ্য যে,ওই সময়ে শিক্ষা  প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকার জন্য এটার প্রতি আসক্তি আরো বেড়ে যায়। অনলাইনে ক্লাস করার বাহানা দিয়ে এটার জন্য তারা আরো সময় ব্যয় করতে থাকে।

বাচ্চাদের অবসর সময় কাটানোর জন্য তাদের মোবাইল দেওয়া হয়। শিশু এবং কিশোররা মোবাইল ফোন পেয়ে ফ্রি ফায়ার ডাউনলোড করে। ফ্রী ফায়ার বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় গেমস। এটিতে নির্দিষ্ট ম্যাপ থাকে। কালাহারি ও বারমুডা ম্যাপ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এখানে প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব সার্ভার থাকে। নিজস্ব গেমিং একাউন্ট খোলা যায় এবং পছন্দমত গেমিং একাউন্টের নাম দেওয়া যায়। নিজস্ব গেমিং একাউন্ট এর কোড থাকে। বন্ধুদের সাথে ইনভাইটিং এর মাধ্যমে যুক্ত হওয়া যায়। প্রত্যেকের নিজস্ব ক্যারেক্টার থাকে এবং ক্যারেক্টারের বিভিন্ন অ্যাবিলিটি থাকে। প্রত্যেকের নিজস্ব প্লেয়ার থাকে (INPC) যাদের মাধ্যমে জেতার চেষ্টা করে। একটি বারমুডা ম্যাপে ৫০ জন প্লেয়ার থাকে। তাদের মধ্যে একজন বিজয়ী হন। তবে এই বিজয়ের নেশাই যেন তাদের প্রকৃত সফলতা থেকে বঞ্চিত বা ঝড়ে পড়ার কারণ! একাউন্টের লেভেল বাড়তে থাকে।

প্রত্যেক লেভেল আপ এর সময় ভার্চুয়াল গিফট পাওয়া যায়। নিজের রয়ালিটি বাড়ানোর জন্য টাকা বিনিয়োগ করে। টাকা দিয়ে ডায়মন্ড/ ইউসি কিনে এবং এটি গেমস এর ভিতরে খরচ করে। বিভিন্ন ধরনের গান স্কিন, ইমট, জামাকাপড় ইত্যাদি ক্রয় করেন। এগুলো  কেনার মাধ্যমে আইডি দেখতে সুন্দর হয় এবং বিভিন্ন এবিলিটি পাওয়া যায়। এই সকল আইডি আবার বিক্রয় বা ক্রয় করা  যায়। পেমেন্ট মেথড: অনলাইন ব্যাংকিং/মেইল। অনেকে আবার বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা চুরি করে এবং সেই টাকা দিয়ে ডায়মন্ড কেনে। এটি সাধারণত ১১ থেকে ২১ বছর এর লোক খেলে থাকে।

GTA-5/Minecraft: গেমসটি অনলাইন গেম। গেমসগুলো টাকা দিয়ে কিনে খেলতে হয় এবং খুবই জনপ্রিয় গেমস। গেমসটি পিসি অথবা ফোনে খেলা যায়। গেমসটি কেনার জন্য নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগে। বিভিন্ন মিশন থাকে  এবং মিশন গুলো অনেক মজাদার হয়। খুবই অল্প দিনে এটিতে সবাই আসক্ত হয়ে যায়। এটি মূলত 18+ গেম।
 
1Xbet/Male bet/অনলাইন জুয়া প্ল্যাটফর্ম: এগুলো জোয়ার সাইট এবং একটি বাংলাদেশের সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। সকল প্রকার অনলাইন গেমস খেলার পরে এবং অনেক টাকা খরচ করার পরে অনেক মানুষই গেমস খেলার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চায়। বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সবাই এই সাইটগুলোর নাম জানে। এখানে IPL/BPL ইত্যাদিতে নিজেদের প্রেডিকশন এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে। কোন দল জিতবে, কোন দল হারবে অথবা কোন দল ড্র করবে এইসবের উপর প্রেডিকশন করে। কোন বলে ছয় মারবে, কোন বলে আউট হবে ইত্যাদির উপরেও প্রেডিকশন করে। এই জুয়ার সাইটে অনেক মানুষ টাকা বিনিয়োগ করে এবং জুয়া খেলে। পেমেন্ট মেথড: অনলাইন ব্যাংকিং/ইমেইল/বিকাশ/নগদ ইত্যাদি। টাকাগুলো উইথড্র করে। জেতার টাকা দিয়ে অনেকে মাদকদ্রব্য ক্রয় করে এবং এগুলো সেবন করে। এসকল জোয়ার সাইটে বিভিন্ন ধরনের গেমস থাকে। এর মধ্যে লুডু উল্লেখযোগ্য। জোয়ার টাকা শেষ হওয়ার পরে অনেকে  অবৈধ উপায় বেছে নেয়। ক্রমে চুরি ,ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অবৈধ উপায়ে টাকা উপার্জন করে। এর ফলের সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এটি মূলত ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে এবং অল্প সময়ে সবাই সংক্রমিত হয়। এটি আমাদের সমাজে পচন ধরাচ্ছে। ধ্বংশ করছে আগামী প্রজন্ম!
So..
"Say no to ONLINE OR OFFLINE GAMES!!!"

আব্দুল্লাহ আল মামুন রনী
শিক্ষক, খরসূতি চন্দ্রকিশোর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বোয়ালমারী, ফরিদপুর

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

কাউনিয়ায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
সখীপুরে মুঘলদের নিদর্শন দেওয়ানবাড়ি মসজিদ
নালিতাবাড়ীতে চেক ছিনতাই ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
বন্ধ হচ্ছে পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইট
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল আরো দুই মাস

সর্বাধিক পঠিত

কুবির প্রশ্ন সরবরাহের সেই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটি
মুন্সীগঞ্জে মা-বাবার সঙ্গে অভিমান করে কিশোরের আত্মহত্যা
শরীয়তপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি নিহত
বিএনপি নেতার বাসা থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার, গ্রেফতার ১৩
সখীপুরে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close