ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রাচীনতম নিদর্শন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দেওয়ান বাড়ি মসজিদ। অনন্য স্থাপত্য শিল্পের এই মসজিদটি মোঘল আমলের শেষ দিকে নির্মাণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। উপজেলার কচুয়া গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে আট গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি।
দেওয়ান পরিবারের পূর্বপুরুষ পীরে কামেল হযরত শাহ্সূফি মো. গোমর আলী দেওয়ান (রহ.) ১৮৪০ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে ইট, চুনাপাথর ও সুরকি। ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের ওই মসজিদের প্রতিটি দেওয়াল ৪০ ইঞ্চি পুরু। যার ভেতরে-বাইরে নানা কারুকাজ খচিত। চোখ জুড়ানো বিস্ময়কর এই প্রাচীন স্থাপত্যের পিলারগুলোতে কোনো প্রকার লোহা বা রড ব্যবহার করা হয়নি বলে জানান এলাকার প্রবীণ মুসল্লিরা।
পাঁচ প্রকোষ্ঠের এই মসজিদের ভেতরে ও বাইরে রয়েছে নানা কারুকাজ। মসজিদের উত্তর পাশে বিশাল পুকুর। পুকুরটি ঘিরে রয়েছে নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ। তার পাশেই রয়েছে কবরস্থান। যেখানে ঘুমিয়ে আছেন হযরত শাহ্সূফি মো. গোমর আলী দেওয়ানের ছেলেসহ পরবর্তী বংশধর।
মসজিদের পাশেই রয়েছে বিশাল এক ঈদগাহ মাঠ। যেখানে প্রতি ঈদের নামাজে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মুসুল্লি জমায়েত হন। এ ছাড়া মসজিদের ভেতরে প্রায় ৩০০ মুসুল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
ইমামের তত্ত্বাবধানে মসজিদটিতে রয়েছে মক্তব খানা। যেখানে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কোরআন শিক্ষা দেওয়া হয়। মসজিদের পেশ ইমাম আইন উদ্দিন এমন একটি প্রাচীন মসজিদের ইমামতি করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।
বংশক্রমিক ধারায় মসজিদটির বর্তমান মুতাওয়াল্লি মাহমুদা হাবীব। তিনি জানান, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান হাবিবুর রহমানের স্ত্রী। হাবিবুর রহমান ছিলেন মসজিদের সর্বশেষ মুতাওয়াল্লি। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ওপর মসজিদের ভার এসে পড়েছে।
তিনি আরো জানান, মসজিদটি প্রায় দেড়শ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে। এটিই সখীপুরের একমাত্র প্রাচীন মসজিদ।
কেকে/এএম