কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের প্রশ্নফাঁস কাণ্ড এবং প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িতদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিপ্লবী ঐক্যজোট।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় প্রশ্নফাঁসের সাথে সম্পৃক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে তখন আমরা লজ্জিত। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, ভুয়া জাল সনদ দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ, পছন্দের শিক্ষার্থীকে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে ৩.৯৪ বানানো এক নজির স্থাপন করছে যা শিক্ষকরাই এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশকে না দিতে পারবে কিছু, না পারবে এ জাতিকে!
এ সময় মার্কেটিং ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, ঐ শিক্ষক নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে প্রশ্নফাঁস করেছে যা শিক্ষক জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। এ ধরনের শিক্ষক এবং প্রশ্নফাঁসের সুবিধাভোগী সিজি পাওয়া শিক্ষার্থী যখন শিক্ষক হবেন ভবিষ্যতের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেমন হুমকিস্বরূপ তেমনি জাতির জন্যও হুমকিস্বরূপ।
অর্থনীতি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যারা জাতির কর্ণধার আজ তাদের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা খুবই লজ্জিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি প্রশ্নফাঁসকারীদের কোনো ধরনের লজ্জা নেই। এ সময় তিনি প্রশ্নফাঁসের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে স্থায়ীভাবে অব্যাহত দাবি জানান।
গণিত বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন, প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দাঁড়ানোর কথা ছিল কিন্তু যৌক্তিক দাবি হওয়া সত্ত্বেও আমি আশাহত হই। বিশ্ববিদ্যালয় যখন সুনামের সাথে অগ্রসর হচ্ছিল প্রশ্নফাঁসের মতো এ ধরনের সংবাদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম তলানিতে নিয়ে আসে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি নাম্বার টেম্পারিংসহ প্রশ্নফাঁসের মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে অনেক শিক্ষক জড়িত আছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান করেন। তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি প্রশ্নফাঁসের সাথে সম্পৃক্তদের বহিষ্কারের দাবি তুলেন।
তিনি আরো বলেন, যারা নাম্বার টেম্বারিং সাথে জড়িত, নারীদেরকে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে পালায় এ ধরনের শিক্ষকদের জন্য একটা বড় শিক্ষা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে বেনামি ই-মেইল থেকে বিভাগীয় প্রধান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ আসে। এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ঐ শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
কেকে/এএম