# হাতির গায়ে আঘাতের চিহ্ন
# প্রায় দেড় কিলোমিটার রক্তের দাগ
# প্রতি মাসে একটি করে হাতি মারা যাচ্ছে
হাতির সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। বনবিভাগের অবহেলা ও বনকে পর্যটকখাতে উন্নয়ন করার কারণে হাতি চলাচলের পথ, খাদ্য স্থান কমার ফলে দিন দিন হাতি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল অবস্থায় বনে মরে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। কক্সবাজারে আবারো বন্যহাতির মুত্যু হয়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের সদর বিটের জুমছড়ি বড়খাল এলাকায় হাতিটির মুত্য হয় বলে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকালে বন্যহাতির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বনবিভাগের কর্মকর্তারা মৃত হাতিটিকে দেখতে যান। এসময় কক্সবাজারে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন। তিনিও বন্যহাতির মৃত্যু ঘটনা কেন হলো তা সরেজমিনে দেখতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ পর্যন্ত এই তিন মাসে ৩টি হাতি কক্সবাজারে দক্ষিণ বনবিভাগে মারা গেছে যা রেকর্ড় সংখ্যক বলা চলে। হাতির গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও, এই হাতিটিকে মেরে ফেলা হয়েছে- এমন দাবি মানতে নারাজ কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বনবিভাগ জানায়, উখিয়া রেঞ্জের সংরক্ষিত বনের জুমছড়ি এলাকায় একটি বন্যহাতি মৃত অবস্থায় দেখতে পায় ইআরটি সদস্যরা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেনারি সার্জনকে খবর দিলে তারা প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করে। ভেটেনারি সার্জনের এক কর্মকর্তা জানান, হাতিটির শরিরের ভিতর থেকে তিনটি গুলির (সীসা) বের করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই গুলির আঘাতে বন্য হাতিটি মারা যেতে পারে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, উখিয়া রেঞ্জের সদর বিটের জুমছড়ি এলাকায় মৃত হাতিটি সরেজিমনে দেখেছি। হাতিটি শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে মারা যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাতির বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত রক্তের দাগ রয়েছে। সুরতহাল করা হয়েছে, ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানতে পারবো।
এদিকে বনবিভাগের অবহেলা ও বনকে পর্যটকখাতে উন্নয়ন করার কারণে হাতি চলাচলের পথ, খাদ্য স্থান কমার ফলে দিন দিন হাতি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল অবস্থায় বনে মরে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ঠিক তেমনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের টেকনাফ রেঞ্জে প্রতিনিয়ত হাতি মারা যাচ্ছে। এর আগে ২টি হাতি মারা গেছে। গত ৫ জানুয়ারি, বাচ্চা প্রসবের সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং বনবিটে একটি মা হাতির মৃত্যু হয় এবং আরেকটি গত ১৮ জানুয়ারি হ্নীলা বিটের পাহাড়ি ছড়া মৃত হাতির সন্ধান পাওয়া যায় পরে তা পোষ্ট মর্টেম করে মাটিতে পুতে ফেলা হয় বলে জানা যায়। এছাড়া গত বছরের ১৬ আগস্ট উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নে নোয়াখালীপাড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়। এভাবে হাতি শূন্য হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
গত তিন মাসে ৩টি হাতি মারা যাওয়ার ফলে প্রতিমাসে গড়ে ১টি করে হাতি মারা যাওয়ার রেকর্ড় করেছে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ।
কেকে/এজে