ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অন্যান্য ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে কুকুরে কামড়ানো রোগীর ভীড়। গত অক্টোবর মাসে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক হয় এমন প্রাণির (শিয়াল, বেজি, বাদুড়, বিড়াল, কুকুর) কামড়ে আক্রান্ত রোগী এসেছে ৪৬৪ জন, এরমধ্যে কুকুরে কামড়ানো রোগী রয়েছে ১৩৬ জন। মোট আহতের ২৬৯ জন পুরুষ, ১৯৫ জন মহিলা, এরমধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী ১৭১ জন এবং ১৫ বছরের উর্ধ্বে ২৯৩ জন।
এছাড়া চলমান নভেম্বরের ৪ তারিখ পর্যন্ত ৫০ জনের অধিক এসেছেন কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণির কামড়ে আহত হয়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা এসকল রোগীর একটা অংশ রয়েছে পাশের উপজেলা সাভারের আশুলিয়া এলাকার।
তথ্য বলছে গত ২৯ অক্টোবর একদিনে কুকুরে কামড়ানো ৩৯ জন রুগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক এআরভি (অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন) ভ্যাকসিন সরবারহ নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। যার ফলে ভ্যাকসিনের জন্য প্রতিদিনই হাসপাতালে কুকুরের কামড়ে আহত লোকজন এলেও বিনামূল্যে সরকারি ভ্যাকসিন মিলছে না। একের পর এক কুকুরের কবলে পড়ে জলাতঙ্কের ঝুঁকি এবং সরকারি ভ্যাকসিন না থাকায় কুকুরাতঙ্কে রয়েছেন ধামরাই উপজেলাবাসী।
কুকুরের কামড়ে আহত রোগীর স্বজনেরা জানান, হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই, আমরা বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনলে হাসপাতাল থেকে সেবা দিচ্ছেন। সরকারি ভ্যাকসিন পেলে আমাদের জন্য উপকার হতো। পৌর সভার বাসিন্দা খুররম চৌধুরী টুটুল বিড়ালের আচড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসে বলেন, তিনটি টিকা দিতে হবে আজ ভ্যাকসিন কিনে এনে একটি দিয়ে গেলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের সহকারী আয়েশা জানান, আমাদের হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই, আমরা রোগীদের চারজনের গ্রুপ করে দেই তারা টিকা কিনে আনেন আমরা টিকা পুশ করে দেই। তাতে রুগীদের খরচ কম হয়। আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করি।
পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভা কর্তৃক কুকুর নিধন প্রকল্পটি উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট) বন্ধ করে দেয়ায় পাড়া মহল্লায় ঝাঁকে ঝাঁকে বেড়েই চলছে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা। এসব কুকুরের কামড়ে যেন জলাতঙ্ক রোগ না ছড়ায় সেজন্য নেয়া হয়েছিল কুকুরকে ভ্যাকসিন (টিকা) দেয়ার কর্মসূচি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারসিম তারান্নুম হক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাসখানেক ধরে ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। মাঝে মাঝে অনেক হাসপাতালেই এমন হয়। যখন সরবরাহ থাকে না তখন রোগীদের কিনে নিতে হয়। আমরা ভ্যাকসিনের জন্য চাহিদাপত্র জমা দিয়েছি, ভ্যাকসিন সরবরাহ হলে তখন বিনামূল্যে দেয়া হবে। যারা কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে আসেন তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে পরামর্শ দিই।
কেকে/এজে