বিচারিক প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকাল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ টিসিবি অডিটোরিয়ামে “বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিয়ামের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, আছিয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইসলামের ব্যভিচার আইন রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে, যা রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান বিচার ব্যবস্থা দীর্ঘসূত্রিতার শিকার। শিশু ও নারী নির্যাতনসহ নানা অপরাধের বিচার দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। আইনের দুর্বলতার কারণে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। আইন কমিশনের সংস্কার ও আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সহকারী মহাসচিব মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের বলেন, ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে গেছে। প্রশাসনের ভেতরে থাকা কিছু চক্র ষড়যন্ত্র করে ইউনূস সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এসব ষড়যন্ত্র কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। অন্যথায় দেশে বিশৃঙ্খলা আরো বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম অপু, খেলাফত মজলিশের মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী, আলহাজ আনোয়ার হোসেন, মুফতী ওয়ালি উল্লাহ, মাওলানা নুরুল ইসলাম নাঈম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মোস্তফা আল মামুন মনির, নগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম শরীয়তুল্লাহ, মুফতি মো. মাছউদুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, মুফতী নিজাম উদ্দীন, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দীন পরশ, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার (অব.) আমিনুল হক তালুকদার প্রমুখ।
নগর সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
মাওলানা মাসউদ বলেন, যৌক্তিক সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ে স্থানীয় নির্বাচনের পরেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই-আগষ্ট পরবর্তী নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও শক্তিমত্তা দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কোনো বিশেষ দল বা দেশের অশুভ শক্তির চাপে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের পরে আয়োজন করা যাবে না। এমনটা হলে জুলাই-আগষ্টের শহিদ ও তাদের পরিবারের সাথে গাদ্দারী করা হবে। এ দেশে আবারো স্বৈরাচারের বীজ বপন হবে। দেশপ্রেমিক জনগণ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্পষ্ট দাবির আলোকে আগামী জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতির বাইরে হতে দেওয়া হবে না।
কেকে/ এএম