রমজান তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধির মাস। রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তাকওয়ার গুণবালী অর্জন করলে শিশু আছিয়ার মতো কাউকে দুঃখজনকভাবে সম্ভ্রম হারাতে বা জীবন দিতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকাল ৪ টায় রাজধানীর গুলশানে দ্য ক্যাফে রিওতে বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমি আয়োজিত কবি-সাহিত্যিক, বিট সাংবাদিক ও শুভাকাঙ্খীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কালচারাল একডেমির সভাপতি আবেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সেক্রেটারি ইব্রাহীম বাহারী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মুজাহিদী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক শামসুল আলম, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড.চৌধুরী মাহমুদ হাসান, ড.আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সহকারী সম্পাদক ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম, এনএনবিডি২৪.কম এর সিইও মু.আতাউর রহমান সরকার, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি মাহবুব মুকুল, বাচীক শিল্পী বায়েজীদ মাহমুদ, কবি হাসান আলীম. জাকির আবু জাফর প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন নোংরামোতে ভরে গেছে। এক শ্রেণির কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতি কর্মীর রগেরগে যৌনাচার, কামাচার ও নারী দেহের আপত্তিকর উপস্থাপন ছাড়া তাদের কর্মে গতি আনতে পারে না। অথচ সৃজনশীল, ইতিবাচক ও শালীনতা বজায় রেখেই যে শিল্প ও সাহিত্য চর্চা করা সম্ভব তা আমাদের তাকওয়াবান কবি-সাহিত্যিকরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এক্ষেত্রে যারা বিপথগামী তাদেরকে অবশ্যই ইতিবাচক ও আদর্শিক পথে ফেরাতে হবে। মূলত আমাদের দেশে অশ্লিলতাকে ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। দেশের শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনের বেশ কিছু ব্যক্তি বিপথগামী। তারা অশ্লীলতা, বেহায়াপনা উৎসাহিত করে মানুষের ঈমান-আকিদাহ নষ্ট করছেন। নারীদেহকে বানানো হয়েছে পণ্য হিসাবে। কিন্তু আমরা এক্ষেত্রে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছি।
অন্যায়ের প্রতিরোধ সম্পর্কে হাদিসে রাসূল (সা.) এর বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, কোথাও অন্যায় হলে তা শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিহত করতে হবে। সে শক্তি না থাকলে মুখে প্রতিবাদ করে তা প্রতিহত করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সে সক্ষমতা না থাকলে মনে মনে ঘৃণা করতে হবে। আর তা হচ্ছে ঈমানের সর্বনিম্ন পর্যায়। তাই দেশের সাহিত্য অঙ্গনকে কলুষমুক্ত করার জন্য তাক্বওয়াবান কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় জাতিকে তাক্বওয়াবান বানানো যাবে না।
তিনি বলেন, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ, অদ্বিতীয় ও নির্ভূল জীবন বিধান হলেও অনেকেই পুরোপুরি অনুসরণ করে না। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে দ্বীনের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হতে বলেছেন। আর আংশিক মানা না মানার চেয়ে খারাপ। আল্লাহ তাদের জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। আর যারা আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ি বিচার-ফয়সালা করে না তাদেরকে কালামে হাকীমের কোথাও কাফির, কোথাও ফাসিক ও আবার কোথাও জালিম হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। পার্লামেন্টে আল্লাহ ওয়ালা লোক নির্বাচিত হোক তা তারা চায় না। অথচ দেশে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ৫ বছরের মধ্যেই দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা, নৈরাজ্য ও ধর্ষণসহ সকল প্রকার অপরাধ মুক্ত করা সম্ভব। দেশে কোন দারিত্রতা, বেকারত্ব ও বস্তি থাকবে না। তিনি আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্ব দুর্নীতি, দুঃশাসন ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তাহলেই দেশ জাতির মুক্তি মিলবে।
এতে মোনাজাত পরিচালনা করেন বাড্ডা কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আনোয়ার হোসেন মোল্লা।
কেকে/ এমএস