রমজানে ঈদের কেনাকাটা মানে বিপণিবিতান গুলোয় উপচে পড়া ভিড়। কুমিল্লা মার্কেটগুলোতে এর ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকে ভিড় দেখা গেছে ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা, কিউ আর টাওয়ার শপিং মল, আড়ং, টপ টেন, খন্দকার হক টাওয়ার, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, প্লানেট এসার শপিং মল, এবং কুমিল্লার অধিকাংশ শপিং মলে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন ক্রেতারা। তবে প্রায় সবার মুখে শোনা গেছে একই আক্ষেপ ‘এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি।’ কৌতূহলের বিষয় হলো, শুধু ক্রেতা নয়, বিক্রেতারাও বলছেন একই কথা।
পোশাকের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বেশির ভাগ ক্রেতা। বিশেষ করে যাঁদের আয় নির্ধারিত ও সীমিত। মূল্যস্ফীতির চাপে ছোট বাজেটে ঈদের কেনাকাটার তালিকায় কাঁচি চালাতে হচ্ছে তাদের।
পরিবার নিয়ে কুমিল্লা সাত্তার খান শপিং কমপ্লেক্সে আসা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গতবারের ১ হাজারের ড্রেস এবার ১৫০০ টাকায় ও পাচ্ছি না। আমাদের তো বেতনের গোনা টাকা। চাইলেই অঢেল খরচ করা সম্ভব নয়। যা যা কিনব ভেবেছিলাম, সেখান থেকে কমাতে হচ্ছে। মেয়ের জন্য পার্টি গাউনের সঙ্গে নতুন জুতা কেনার পরিকল্পনা ছিল। গাউনে অনেক টাকা খরচ হওয়ায় জুতা এবার আর কেনা হচ্ছে না।
দাম বেশি হওয়ার ব্যাপারটা সমস্যায় ফেলছে ব্যবসায়ীদেরও। কয়েকজন পোশাক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে তেমন ইঙ্গিত মিলল। ‘গতবার ২ থেকে সাড়ে ৩ হাজারের মধ্যে যেই ড্রেস বেচতে পারছি, এবার তা সাড়ে ৩ হাজারে কিনতেও পারি নাই। এয়ারে (বিমানে) কিছু মাল আসছে। তাতে কস্টিং (খরচ) অনেক বেশি’—বললেন কুমিল্লা ইস্টান ইয়াকুব প্লাজার দোকান রঙ বেরঙ এর স্বত্বাধিকারী জিল্লুর রহমান রাশেদ।
একই কথা শোনা গেল আরো কয়েকজনের কাছে। তারা বলেন, ভারত থেকে এবার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পোশাক আমদানি হয়নি। এ সুযোগে দেশের পোশাক প্রস্তুতকারকেরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে দেশি পোশাকও বেশি দামে কিনতে হয়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আকাশপথে পণ্য আনায় খরচ বেশি পড়েছে। ফলে গতবারের তুলনায় এবার ঈদের পোশাকের দাম বেশি।
কুমিল্লা সাত্তার খান কমপ্লেক্স এর লেডিস ফ্যাশনের দোকান মালিক জানালেন, গতবারের চেয়ে এবার দেশে তৈরি পোশাকের দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে।
পুরো ঈদের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবারের মতো ভারতে গিয়ে আমরা ড্রেস আনতে পারি নাই। এয়ারে সামান্য কিছু আসছে। কস্টিং বেশি হওয়ায় সেগুলোর দাম অনেক বেশি পড়ছে। ভারতের বদলে পাকিস্তান, চীন ও থাইল্যান্ডের কিছু পোশাক এবার ঈদের বাজারে এসেছে বলে জানান দোকানিরা। তবে ভারতীয় পণ্যের তুলনায় সেগুলোর দাম বেশি।
কুমিল্লা ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার দোকান রঙ বেরঙে এর স্বত্বাধিকারী জিল্লুর রহমান রাশেদ বলেন , ‘ইন্ডিয়ার যে ড্রেসটা আমরা ৫ হাজার টাকায় বিক্রিয় করতে হয়।পাকিস্তানের সেই ড্রেস ১৫ হাজারে বিক্রিয় করতে হয়। পাকিস্তানের ড্রেসের কোয়ালিটি ভালো হয়। সে কারণে দামও অনেক বেশি। থাই বা চায়না মালেরও একই অবস্থা।
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, ভারত থেকে পণ্য না আসায় একদিকে যেমন আক্ষেপ করছেন ব্যবসায়ীরা, অপর দিকে ভারতের ভিসা প্রায় বন্ধ থাকায় কিছু বাড়তি ক্রেতা আসছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
কেকে/ এমএস