বাগেরহাটের ফকিরহাটে তিন বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে আলকাছ তালুকদার (৬৩) নামের এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করেছে ফকিরহাট থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় তাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করে ফকিরহগাট থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আলকাছ তালুকদার বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার চিংগাখালী এলাকার মৃত অদেল উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বাড়িওয়ালী বিষয়টি অবগত করলে শিশুটিকে ফকিরহাট উপজেলার সাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যা। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে অভিযুক্ত আলকাছকে আটক করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ মহিউদ্দিন ইসলাম বলেন, আলকাছ তালুকদার মৃত অলিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকে। এই বাড়িতে থেকে বিভিন্ন ধরনের যৌন উত্তেজনার ঔষধ বিক্রি করেন। এ ঘটনার দুইদিন পরে শিশুটিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিশুটির মা নাসিমা বেগম বলেন, বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে রান্না করার সময় আলকাছ তালুকদার আমার মেয়েকে লাড্ডু খাওয়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর মেয়ের কান্না শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা লাগানো। তখন বাড়িওয়ালীকে নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করি। পরবর্তীতে বাড়িওয়ালীকে জানাই আমার মেয়ের সঙ্গে কিছু ঘটেছে। কিন্তু বাড়িওয়ালী এ বিষয়টি গোপন রাখতে বলে। জানাজানি হলে বাড়ি থেকে বের করে দেবেন বলে জানান বাড়িওয়ালী। এ ভয়ে আমি কাউকে কিছু না জানিয়ে চুপ করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, ১৩ তারিখ যখন আমার মেয়ের শরীর থেকে রক্ত পড়ছিল, তখন বাড়িওয়ালীকে বিষয়টি জানালে তিনি ওষুধ এনে খাওয়াতে বলেন এবং আমার বাড়ির মানসম্মান আছে বলে তিনি বিষয়টি কাউকে না জানানোর বলেন।
তিনি বলেন, ১৪ তারিখ যখন আমার মেয়ের শরীর থেকে বেশি রক্ত ক্ষরণ হয়, তখন বাড়িওয়ালী আকলাছকে দিয়ে হাসপাতালে পাঠায়।
বাড়িওয়ালী মৃত অলিয়ার স্ত্রী বলেন, শিশুটির চিৎকার শুনে বৃদ্ধের ঘরে গিয়ে আমরা ঘর আটকানো বন্ধ পাই। পরে ডাকাডাকি করে ঘর খুলে শিশুটিকে উদ্ধার করি। পরবর্তীতে শিশুটির সঙ্গে কিছু একটা হয়েছে বলে জানান তার মা। এরপর আমি বৃদ্ধ আকলাসকে বলি কিছু করে থাকেলে ডাক্তারের খরচ দিয়ে দাও। পরে একলাছ শিশুর মাকে ২০০ টাকা দেয় চিকিৎসা করানোর জন্য।
তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে এটা সত্যি নয়। তবে আমি বলেছি যে, রমজানের সময় যদি কাউকে না জানানো হয় তাহলে মান-সম্মান থাকবে, কিন্তু পরবর্তীতে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে আমি নিজেই ডাক্তারের কাছে যেতে বলি।
ফকিরহাট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ তানভীর মাহমুদ বলেন, ভুক্তভোগী শিশুটিকে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। কর্মরত ডাক্তার ইনজুরি দেখতে পেয়ে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক মীর বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে বিজ্ঞ আদালতে আসামিকে ধর্ষণ মামলায় প্রেরণ করেছি।
কেকে/এএম