ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এস আলম কোম্পানির গাড়িতে চড়ায় সালাহউদ্দিনের দুঃখ প্রকাশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৭:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৪

এস আলম কোম্পানির গাড়িতে চড়ায় সালাহউদ্দিনের দুঃখ প্রকাশ

এস আলম কোম্পানির গাড়ি চড়ার ঘটনাকে ‘অসাবধনতা ও অনিচ্ছাকৃত’ উল্লেখ করে দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার দুপুরে গুলশানে নিজের এপার্টমেন্টে এক জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে তিনি এই দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

সালাহউদ্দিন বলেন, গাড়ি সংক্রান্ত যে সংবাদটা প্রকাশিত হয়েছে তাতে জনমনে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তারপরেও একটি পুরাতন গাড়ি সে আমার ছোট ভাই নিয়ে গেছে সে খুব আনন্দিত যে আমি তার গাড়িতে আমি চড়তে উঠেছি এটা আমার পক্ষ থেকে যদি জানতাম যদি যে একটা কোম্পানি গাড়ি তাহলে হয়ত আমি সাবধনতা অবলম্বন করতাম। তারপরেও আমার এই অসাবধানতা এবং এই ইচ্ছাকৃত ভুলের জন্য যদি আমি দেশবাসীর মনে কষ্ট দিয়ে থাকি এবং অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকি সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।

ঘটনার পূর্বাপর তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, গতকালকে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, আমি দীর্ঘ ১০ বছর পর আমার নিজ জেলা কক্সবাজারে অবতরণ করলে সেখানে আমার দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে একটি আমি ব্যবহার করেছি যে গাড়ি একটি কোম্পানি যা সংবাদ লেখা হয়েছে এস আলম কোম্পানি। আমি কোন গাড়িতে উঠেছি সেটা আমি নিজেও জানতাম না, এটা সেইদিন কক্সবাজার বিমান বন্দরে নামার পরে কিছু গাড়ি দেখেছি ভেতরে তা আমাদের নেতা-কর্মীরা বললো যে, এটাতে উঠেন এই গাড়িতে আমি উঠেছি। তা এখন সেই গাড়িটি কার সেই মুহুর্তে আমি চিন্তাভাবনার মধ্যে ছিলাম না, আমি তখন অনেকটা আবেগ আপ্লুত ছিলাম, আমার দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছিলাম এবং মনের মধ্যে মা-বাবার কবর জিয়ারতের বাসনায় মগ্ন ছিলাম। তখন আমার মনের অবস্থা ছিলো না যে, আমি কোন গাড়িতে কার গাড়িতে উঠছি।

তিনি বলেন, সংবাদটি (গণমাধ্যম) প্রকাশ হওয়ার পরে আমি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করলাম, আমি জানতে পারলাম এই গাড়িটি আমার এলাকার এক ছোট ভাইয়ে যে, উক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন জমি-জমা দেখাশুনার কাজ করে এবং কোম্পানি থেকে তাকে বিভিন্ন সমযে ব্যবহারের জন্য এই গাড়িটি দেয়া হয়। সেও অন্য সকলের মতো আমাকে বরণ করার জন্য এয়ারপোর্টে গেছে.. তার গাড়িতে করেই গেছে। সেও জানতো না যে আমি তার গাড়িতে উঠবো। আমিও জানতাম না যে, আমি কার গাড়িতে উঠবো। এটা জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঠিক করেছে।

চট্টগ্রামের এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে গত ২৮ আগস্ট নিজ এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নিতে যান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর দলের নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরের সঙ্গে পেকুয়ায় পৌঁছান তিনি।

কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদের গাড়িবহর পেকুয়ায় পৌঁছানোর বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ রকম একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যে গাড়িতে (জিপ) চড়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, সেটির নম্বর চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। এটি মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জিপ যা এস আলম গ্রুপে। তিনি সামনে সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

এস আলমের গাড়ির এই ঘটনায় কোনো ষড়যন্ত্র দেখছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিষয়টা আমি অন্যভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই। আমাদের সবার উচিত পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ করা। যারা দীর্ঘ ১৫/১৭ বছরে দেশটাকে বিভিন্নভাবে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্র্রতিষ্ঠান, দেশের বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগসহ এমনকি ফোর্থ স্টেট মিডিয়াসহ সর্বত্র যে বিভিন্ন পর্যায়ে পচন ধরেছে, ফ্যাসিবাদের যে স্বাক্ষর তারা এখানে রেখেছে তাদের ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করার জন্য সেই বিষয়ে আমাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। আমাদের এখন অগ্রাধিকার সেটা।

তিনি বলেন, আমরা যেন মনোযোগ দেই যেমন গুম, খুন, অপহরণের সাথে জড়িত ছিলো, যারা আয়না ঘরের সাথে জড়িত ছিলো, যারা ফ্যাসিবাদের শাসন ব্যবস্থাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য বিভিন্ন স্তর থেকে সহযোগিতা করেছে তাদের মুখোশ উন্মাচন করি। তাদের কেউ কেউ হয়ত গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু আমি যতটুকু তাদেরকে যথাযথভাবে ইন্টারোগেশন করা হচ্ছে না। আজ পর্যন্ত কোনো গুমের রহস্য উন্মোচন করা যাচ্ছে না। দেশবাসীর আকাংখা ছিলো আমরা যে গুম-খুনের আস্তানা খুঁজে বের করি, গুম-খুনের সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করি তাদের মুখোশ উন্মোচন করি। বর্তমান যে অন্তর্বতীকালীন সরকার আছে তাদেরকে সহযোগিতা করি, তারা যেন জনগনের জন্য প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করতে পারে সেজন্য তাদের সহযোগিতা করি।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যা কিছু এগুলো পরিহার করলে আমরা মনে হয় ভালো হয়।তারপরও আমার অসাবধনতার জন্য আমি আবারো দুঃখ প্রকাশ করছি।

একটি গণমাধ্যমে গাড়ি চালক আপনার পরিচিত বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই কথা আমি ওই পত্রিকার রিপোর্টারকে বলিনি। এটা কিভাবে লেখেছেন আমি জানি না। এটা মিস কোড করা হয়েছে। ওইখানে একটা মাইক্রোবাস ছিলো যার ড্রাইভারটা আমার এলাকার ছিলো তা আমি মনে হয় ওই গাড়িতে উঠতে ছেয়েছিলাম যে আমার পরিচিত। মাইক্রোবাসে উপরে হুট খোলা নেই বলে আমাকে সেই গাড়িতে উঠতে তারা দেয়নি। হয়তবা এগুলো বলতে গিয়ে পত্রিকার রিপোর্টার আমার বক্তব্য মিসকোড করেছেন।

 
Electronic Paper