ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘আমাদের পরিচয় একটাই সবাই বাংলাদেশি’

নিজস্ব সংবাদদাতা
🕐 ৮:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৪

‘আমাদের পরিচয় একটাই সবাই বাংলাদেশি’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা কেউ মসজিদে যাই, কেউ মন্দিরে বা প্যাগোডায় কিংবা গীর্জায়, তেমনি কারো উৎসব ঈদ-উল ফিতর কারো বা দুর্গা-পূজা কিংবা বড়দিন অথবা বৈশাবী পূর্ণিমা, সেটাও আমার আপনার সবার অভিন্ন পরিচয় নয়। বাংলাদেশের মানচিত্রে আপনার ঠিকানা হতে পারে পাহাড়ে, কারো আবার সমতলে, কেউ বা থাকেন হাওড়ে আবার কেউ ছোট্ট দ্বীপে, নয়তো উপকূলের প্লাবন ভূমিতে কিংবা সুন্দরবনের পাশে। সকল ক্ষেত্রে পরিচয় আমাদের একটাই, আমরা সবাই বাংলাদেশি।


তিনি বলেন, যারা এই পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করেন তারাও জনরোষ এড়িয়ে পালানোর সময় যে পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন সেখানেও তাকে এই ‘বাংলাদেশি’ পরিচয়টিই ব্যবহার করতে হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, এই পরিচয় আমার আপনার যোগ্যতার মূল্যায়নের সময় যেমন নিরপেক্ষভাবে ব্যবহার করতে হবে ঠিক তেমনি আমাদের অপরাধের ক্ষেত্রেও থাকবে একই মাপকাঠি ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও বেগম সেলিমা রহমান প্রমুখ।

তিনি আরো বলেন, সংখ্যালঘুর কার্ড দিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। সেটা দেশেও যেমন হয়েছে, দেশের বাইরেও কম হয়নি। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে আর দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তে যুগযুগ ধরে এই সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরুর স্পর্শ কাতর বিষয় আর নির্যাতনের কল্প-কাহিনী ফাঁদে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার অপচেষ্টা দেশে বিদেশে বার বার কারা করেছে সেটাও আমরা সবাই জানি।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের এই পুরনো খেলার পুনরাবৃত্তি এদেশে আর করতে দেয়া হবে না। আসুন আমরা এগুলোকে হয় কবর দিয়ে নিশ্চিহ্ন করি, নয়তো চিতায় পুড়িয়ে ভস্ম করে দিই।

তারেক রহমান বলেন, এদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে এক ধর্মের উপাসনালয় আরেক ধর্ম অনুসারীরা ঐতিহ্যগতভাবে সুরক্ষিত রেখেছে যুগযুগ ধরে। বার বার প্রমাণ করেছে এদেশে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। আমাদের সবারই এক ও অভিন্ন পরিচয়, আমরা সবাই বাংলাদেশি। এসময় তিনি বলেন, শুধু কথায় নয়; কাজেও এটার প্রমাণ দিতে হবে যখনই প্রয়োজন হবে।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার দেশপ্রেম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ আর শত সহস্র নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি জনগণের আস্থা আর বিশ্বাসের যে জায়গায় পৌঁছেছে, কতিপয় বিপথগামীর হঠকারিতায় সেটা বিনষ্ট হতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে দল আপোষহীন, তিনি দলের কত শীর্ষে অবস্থান করেন সেটা বিবেচ্য নয়। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে দল সেটার প্রমাণ রেখেছে বলেও তিনি জানান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস আর অনুশাসনকে পুঁজি করে যারা ধর্মীয় স্থাপনায় রাজনীতি করবে, বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা ধর্ম বর্ণের বিভক্তিকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে, নিজ নিজ এলাকায় ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে তাদের প্রতিহত করতে তিনি পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে দেশের সাংবিধানিক কাঠামো আর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে যেটা সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য এখনো উন্মুক্ত। তবে তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, যারা যে সংস্কারের প্রস্তাবনাই আনুন আমাদের সংস্কার প্রস্তাবে সেগুলোর সবই অন্তর্ভুক্ত আছে।

তিনি আরও বলেন, বিজয় এখনো অনেক দূরে, সফলতার পথ অনেক দীর্ঘ, আমরা গত ১৭ বছর বিরোধী দলে ছিলাম, আজো আছি। এখন আত্মতুষ্টির সময় নয়, বরাবরের মতো তৃণমূল নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর মত অতীতে যেমন সঙ্কটকালে দলের পাশে ছিলেন; আগামীতেও বাংলাদেশের জনমানুষের প্রত্যাশার ভাষা বুঝে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করলে বিএনপি দেশের মানুষকে একটা নতুন আর পরিবর্তীত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 
Electronic Paper