ঢাকা, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪ | ২১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিএনপির প্রতিবাদ সভায় আ.লীগ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৬, ২০২৪

বিএনপির প্রতিবাদ সভায় আ.লীগ নেতারা

রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়ায় গতকাল শনিবার বিএনপি নেতা হাজী মোস্তফা জামানের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিধি হিসেবে মঞ্চে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা মোস্তফা জামান, সালাউদ্দিন আহমেদ খোকা, হাজী জহির, আজাহারুল ইসলাম আজাসহ কয়েকজন পদধারী বিএনপি নেতা উপস্থিত থাকলেও সভা মঞ্চে অন্য যারা ছিলেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এর বাইরে সভাটিতে উপস্থিত প্রায় দুই/তিনশত লোকের মধ্যে ৫০ শতংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। গতকালের এ সভাটি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করছেন এবং বিভিন্নভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।

সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব নেতা বা শ্রোতা গতকালের মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন- তাদের অধিকাংশই তিন মাস আগেও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের পক্ষে মিটিং মিছিলে বেশ সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক পালাবদলের পর পর তারা এখন বিএনপি নেতার মিটিংয়ের মূল নেতৃত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বিএনপির অনেকের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি একজন পদধারী নেতা প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল হাজী মোস্তফা জামান যে প্রতিবাদ সভাটি করেছেন সেখানে উপস্থিতির ৫০ ভাগই আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন দুই মাস আগেও। তারা এখন ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির মিটিংয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় এ নেতা আরো বলেন, রাজধানী তুরাগের বাউনিয়া এলাকাটি ফ্যাসিবাদ সরকারের সাবেক এমপি ও উত্তরার ছাত্র-জনতা হত্যার মূল নায়ক হাবিব হাসানের নিজ গ্রাম এবং তার নানাবাড়ী এলাকা হওয়ায় বিএনপির তেমন কোন কার্যক্রম গত ১৮ বছরে পরিচালনা করা যায়নি। সামান্য কিছু বাসিন্দা যারা বিএনপি মনা ছিলেন তারাও আওয়ামী লীগের সাথে মিল মিশে একাকার ছিলেন। কিন্তু গতকালের মিটিংয়ের পর দেখা গেছে সম্পূর্ণ বিপরিত চিত্র। প্রতিবাদ মঞ্চের মূল ডাইসে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পদধারী নেতা। তাদের অন্যতম হচ্ছে, আশরাফ খান বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের তুরাগ থানার সাধারণ সম্পাদক, সোহেল রানা আওয়ামী যুবলীগ, সানাউল্লাহ আওয়ামী যুবলীগ, ইসহাক খুনি হাবিব হাসানের বোনের জামাই, ইসলাম উদ্দিন কৃষক লীগ তুরাগ থানার ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতা সেলিম মাদবর, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতা হাজী আব্দুল্লাহ ও আশরাফ খান। তারা সবাই হাবিব হাসানের আত্মীয় এবং শুভাকাঙ্খী। এর বাইরে ছিলেন বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া আবু তাহের আবুল খানসহ অনেকেই। প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি লোক ছিলেন- হাবিব হাসানের নিকট আত্মীয় স্বজনরাই।

উল্লেখ্য, ঢাকা-১৮ আসন এলাকায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা হাজী মোস্তফা জামানের বিরুদ্ধে রুপায়ন গ্রুপসহ বিভিন্ন জায়গা হুমকি ধামকি, দখল চাদাবাজির অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে সর্তকও করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৮ বছর যারা আওয়ামী লীগের হয়ে এলাকায় মাতবরি করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের নিয়ে দলভারি করার শক্ত অভিযোগ আছে। তিনি মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হকের কাছের লোক হওয়ায় কোন অভিযোগের বিষয়ে তোয়াক্কা করছেন না বলে স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে খারাপ কিছু লেখা হলে স্থানীয় সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি প্রায়ই দিয়ে থাকেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মোস্তফা জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি খোলা কাগজকে বলেন, আমরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি বিএনপির লোক নিয়ে। তবে বলে রাখা ভালো এখানে আপনাদের আনিত অভিযোগের বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ করলেও গত পাঁচ বছর যাবত বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে মিটিং মিছিল সমাবেশে আমাদের সঙ্গে ছিলো। এছাড়াও কিছু মানুষকে পিছনে দাঁড়ানোর ছবি এখন দেখতে পাচ্ছি, যাদেরকে আমি চিনি না। আসলে প্রোগ্রাম করার সময় পিছনে কে দাঁড়িয়েছে এতো মানুষের মধ্যে সেটা আমার খেয়াল রাখা সম্ভব হয়নি।

 
Electronic Paper