শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে স্থগিত পরীক্ষা, বিভাগে তালা দিলো শিক্ষার্থীরা
বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
🕐 ৮:১৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে পরীক্ষা কমিটি থেকে শিক্ষকদের পদত্যাগের কারণে মাস্টার্সের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভাগীয় সভাপতির রুম, অফিস রুম এবং ফার্মেসি বিভাগের করিডোরের গেটে তালা দিয়েছে ফার্মেসি বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা ২০২১-২২ এম ফার্ম এ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। আমরা গতবছর মে মাসে বি. ফার্ম শেষ করি। এরপর থেকে দীর্ঘ ৯ মাস অতিবাহিত হলেও আমাদের এম. ফার্ম পরীক্ষা শুরু করতে পারিনি। গত ১০ জানুয়ারি এম. ফার্ন ১ম সেমিষ্টার পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। রুটিনে ১৮ ই ফেব্রুয়ারী প্রথম পরীক্ষা আরাম্ভ হওয়ার কথা থাকলেও আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে চলমান অন্তর্কোন্দলের প্রেক্ষিতে আমরা পরীক্ষা দিতে পারিনি। এরপর আমরা স্ব-বিভাগের সভাপতির নিকট উদ্ভুত সমস্যার কারণ জানতে চাইলে, তিনি ২২ তারিখ সমাধান করা আশ্বাস দেন। আজ ২২ তারিখ আমরা তার কাছে সমাধান চাইলে তিনি এর কোনো সঠিক সমাধান দিতে পারেননি তিনি বরাবরের মতো- আশ্বাস দিয়ে গেছেন। এরপর আমাদের পরীক্ষা কমিটির সভাপতির কাছে যাবতীয় সমস্যা ও সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানতে চাই। তিনি জানান বিভাগীয় সভাপতির সাথে উদ্ভুত সমস্যার অন্তকোন্দল জনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে পৌছাঁতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে তিনি পরীক্ষা কমিটি থেকে অব্যহতি নেন। এমতাবস্তায় আমরা কোনো প্রকার সমাধান না পেয়ে আমরা আমাদের- দাবি আদায়ে আন্দলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ঈদের আগে আমাদের এম ফার্ম ১ম সেমিস্টার ফাইনাল শেষ করতে হবে, আগামী জুলাইয়ের ভিতরে আমাদের এম ফার্ম এর ২য় সেমিস্টার শেষ করতে হবে, শিক্ষক সংকট দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরসন করতে হবে।
এই বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি ড.মোহাম্মদ আলী খান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন দ্রুত শেষ করার জন্য এবং পরীক্ষা তাড়াতাড়ি নেওয়ার জন্য একটা একাডেমিক কমিটির মিটিং দিয়েছিলাম। একাডেমিক কমিটির লাস্ট মিটিং এর আগে যে পরীক্ষা হয়েছিল সেই পরীক্ষায় আমাদের যারা খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন তারা প্রশ্ন প্রনয়ণ করেছিলেন।আমাদের যে খন্ডকালীন শিক্ষকগণ আছেন তাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ ছিল তারা সে শিক্ষকের ক্লাস করবে না এবং এরকম অভিযোগও আছে তিনি কম ক্লাস নিয়ে বেশি বিল করেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের অতি সংক্ষিপ্ত সাজেশন দিতেন। রিসেন্ট পরীক্ষায় তিনি যে প্রশ্ন করেছিলেন সেখান থেকে তিনি যে সট সাজেশন দিয়েছিলেন তার থেকে পরীক্ষায় হুবহু কমন এসেছে, তা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে। এর বাইরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি পরীক্ষা শুরু করে রুম থেকে বের হয়ে যান এবং পরীক্ষার খাতার মার্ক শিক্ষার্থীদের দিয়ে লিখিয়েছেন। এই ধরনের অভিযোগ যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমরা একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে বসি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যেহেতু ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গুলো আসছে তাই আপাতত তাকে প্রশ্ন পত্র প্রণয়ন থেকে বিরত রাখা হবে। যা একাডেমিক কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ঐ দিন একাডেমিক মিটিং এ আমাদের একজন শিক্ষক ছুটি বিহীন অনুপস্থিত ছিলেন।পরবর্তীতে তিনি আপত্তি করেন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক কেনো প্রশ্ন করতে পারবেন না এবং এই কারণে তিনি পরীক্ষা বিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। আমরা তাকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরো করি। তার পদত্যাগের কারণে প্রশ্নপত্র প্রনয়ণ করা সম্ভব হয়নি।ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।সমাধানের জন্য আমি ভাইসচ্যান্সেলর মহোদয়ের সাথে দেখা করি।তিনি একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান এবং খন্ডকালীন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ এর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিলেন না।
তিনি আরো বলেন, ওই শিক্ষকর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গুলো এসেছে তা তদন্ত না করে তাকে আবার প্রশ্ন করতে সুযোগ দিলেন মাননীয় উপাচার্য। এর ফলে পরীক্ষা কমিটি থেকে সবাই পদত্যাগ করলেন। বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে আমি প্রশাসনের সাথে বসবো।তাদেরকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করবো।