এখনো অধরা ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গি
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৩:৩১ অপরাহ্ণ, জুলাই ০১, ২০২৪
বাংলাদেশে প্রথম জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহে। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) শীর্ষ তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাদের একজন মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন সালেহীন। যিনি ১০ বছর ধরে পলাতক।
ওই ঘটনার আট বছর পর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর দিনে-দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে খোদ রাজধানী ঢাকায়। ঘটনার দেড় বছর পার হলেও সেই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার তো করা যায়নি, মেলেনি কোনো সন্ধানও। পালানোর পর সেই দুই আসামিসহ অন্য আসামিদের কেন ডান্ডাবেড়ি ছাড়া আদালতে নেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, দুই জঙ্গি শামীম ও সোহেল দেশেই আছেন। তাদের ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তনের কারণে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। আর ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে পালানো সালাউদ্দিন সালেহীন ভারতে নাকি বাংলাদেশে তা নিশ্চিত নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রের দাবি, সালেহীন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আত্মগোপন করেছেন।
জঙ্গি ছিনতাই ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিটিটিসি কর্মকর্তাদের দাবি, শামীম ও সোহেলের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তাদের ধারণা, এই দুজন দেশ থেকে পালাতে পারেনি। তাদেরকে কারা, কীভাবে, কয়জনের উপস্থিতিতে, কাদের নির্দেশে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পলাতক দুই জঙ্গি মঈনুল হাসান শামীম ও আবু সাদিক সোহেল হলেন জাগৃতী প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত ছিলেন তারা।
জঙ্গি ছিনতাইয়ের ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কারো গাফিলতি ছিল কি-না, তা বের করতে তদন্ত কমিটি করেছিল পুলিশ সদর দপ্তর। সেই কমিটি কিছু সুপারিশও দিয়েছিল। কিন্তু সেসব সুপারিশ শুধুই কাগজে। দৃশ্যমান বাস্তবায়নে উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এব্যাপারে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, দুই জঙ্গি পালানো দুঃখজনক। আমার আমলে এই দুই দুর্ধর্ষ জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছিল। অথচ পুলিশ, কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা, দুর্বলতার কারণে তারা ফিল্মি স্টাইলে পালিয়ে গেল। যাদের গাফিলতি ছিল তাদের বিরুদ্ধে তো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সেটা নেওয়া হয়েছিল কি-না জানি না।
তিনি বলেন, এখন তারা (পলাতক জঙ্গি) তো হুমকি। যারা পালায় তাদের তো সংশোধন হবে সেটাও আশা করা যায না। বরং সহযোগীদের সঙ্গে মেশা বা যোগাযোগ করে সেই জঙ্গি কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করে। তারা দেশে নাকি পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে গেছে তা জানা নেই। তারা তো ফাঁসির আসামি। তারা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত সবার জন্যই বিষয়টি হুমকির।