ঢাকা, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪ | ২১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

পানিবন্দি মানুষের ত্রাণের জন্য হাহাকার

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৯:০০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০২৪

পানিবন্দি মানুষের ত্রাণের জন্য হাহাকার

উজানের ঢলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের কষ্ট। ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ১৫টি জেলা বন্যাকবলিত। পানিবন্দি এসব জেলাল প্রায় ২০ লাখ মানুষ। ১৫টি জেলা হলো- সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, রংপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, ফেনী, রাঙ্গামাটি, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার জেলা।

অনেক নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। কিছু নদীর পানি বিপৎসীমার বেশ উপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে। জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এতে জেলার ইসলামপুর, মাদারগঞ্জসহ ৪ উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু এলাকায়। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা। জামালপুরের সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত এলাকা ইসলামপুরে আকস্মিক বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ তৎপরতাসহ সকল প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম।

ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও দশআনী নদী বিধৌত উপজেলার নাম ইসলামপুর। উপজেলা সদরের বুকচিরে দুই পাশে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা বড় দুইটি নদী। ফলে বন্যা মৌসুম এলেই অবর্ণীয় দূর্ভোগ পোহাতে হয় এই অঞ্চলের মানুষের। যমুনার পানিতে ডুবছে সিরাজগঞ্জ-বগুড়ার নতুন নতুন এলাকা। বাড়িঘরে পানি, জ্বলছে না চুলা। খেয়ে না খেয়ে কাটছে অনেকের দিন। বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি বেড়ে প্লাবিত অনেক এলাকা।

কুড়িগ্রামে চিলমারী-নাগেশ্বরী, সদরসহ ৬ উপজেলার ৪১টি ইউনিয়ন এখন বন্যাকবলিত। পানিবন্দি দেড় লাখের বেশি মানুষ। বসতঘরের চাল ছুঁইছুঁই পানি। রাজারহাটে রাক্ষুসে তিস্তার তীব্র ভাঙনে নদীতে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি, গাছপালা ও বসত ভিটা সহ নানা মূল্যবান সম্পদ। হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরেছে উপজেলার বুড়িরহাট স্পার বাঁধসহ হাট-বাজার,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মসজিদ, মন্দির ও সহস্রাধিক বাড়িঘর। উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা নদী, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলায় ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিন শতাধিক চরের দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি থাকায় চরের বাসিন্দারা কাজে যেতে পারছেন না। তাদের ঘরের খাবারও শেষ হয়ে এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে চরগুলোতে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বন্যাদুর্গতরা। নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসছেন বানভাসি মানুষ। এ জেলার নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে নতুন করে আরও প্রায় ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার পুরাতন বেড়ি বাঁধের দুটি স্থানে প্রায় একশ মিটার এলাকা ভেঙে যায়। ফলে ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়লে নাগেশ্বরী পৌরসভা ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে গাইবান্ধায়। প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা। সেখানে পানিবন্দি প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। রংপুরে, তিস্তার জলে ১২টি ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন রয়েছে। এ জেলার সুন্দরগঞ্জে প্রায় ৫২০০ পরিবার পানিবন্দি।
সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারার পানি কিছুটা কমলেও, এখনও বিপৎসীমার ওপরের আছে। এতে অপরিবর্তিত বন্যা পরিস্থিতি। প্রশাসনের হিসেবে, জেলায় ৬ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি। ২০৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ৯ হাজার মানুষ উঠেছেন। রয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট।

 

 
Electronic Paper